‘বাউত উৎসবে’ মুখরিত চলনবিল
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2019/12/03/pabna-baut-utshob.jpg)
নানা ধরনের মাছে সমৃদ্ধ চলনবিল। উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বেশি দেশীয় মাছ উৎপাদিত হওয়ায় চলনবিলকে ‘মৎস্যভাণ্ডার’ও বলা হয়। তবে দিন দিন কমে আসছে বৃহত্তর চলনবিলের পরিধি। কৃষি জমিতে কীটনাশক প্রয়োগসহ নানা কারণে হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় প্রজাতির মাছের উৎপাদন। তারপরও চলনবিলের রয়েছে নানা ঐতিহ্য। বর্ষা মৌসুমে বিস্তীর্ণ চলনবিলের জলরাশি আকৃষ্ট করে দর্শনার্থীদের।
প্রতি বছর বিল থেকে বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার সময় এখানে শুরু হয় মাছ ধরার ‘বাউত উৎসব’। গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য বাউত উৎসবে শুধু জেলেরা নয়, নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ শখ করে পলো (মাছ ধরার ফাঁদ) দিয়ে মাছ শিকারে নামেন। দূর-দূরান্ত থেকে আসা নানা বয়সী মানুষ অংশ নেন এ মাছ শিকারে। সৌখিন মৎস্য শিকারীদের এক মিলনমেলায় পরিণত হয় পুরো বিল এলাকা।
এমন মনোমুগ্ধকর দৃশ্য চলনবিল ছাড়া অন্য কোথাও খুব কমই দেখা যায়। মাইকে ঘোষণা দিয়ে নির্ধারিত দিনে নির্দিষ্ট বিলে পলো দিয়ে মাছ শিকার এ অঞ্চলের অনেক পুরোনো প্রথা। শুধু পলো নয়, বাদাই, খেওয়া জাল, কারেন্ট জাল ও ঠেলাজাল দিয়েও মাছ শিকার করা হয়। এসব মাছ শিকারিদের স্থানীয় ভাষায় বলা হয় ‘বাউত’।
আজ মঙ্গলবার চলনবিল অধ্যুষিত ভাঙ্গুড়া উপজেলার রহুল বিলে মাছ ধরার ‘বাউত উৎসব’ উদযাপিত হয়। সেখানে ভাঙ্গুড়া, চাটমোহর, ফরিদপুরসহ আশপাশের উপজেলার শত শত সৌখিন মৎস্যশিকারি সাইকেল, মোটরসাইকেল, নছিমন-করিমনে এসে জমায়েত হয় বিলপাড়ে।
বিলে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলে মাছ শিকার। রুই, কাতলা, সৌল, গজার, বোয়াল, মিনার কার্প, টাকিসহ নানান ধরনের মাছ শিকার করে তারা।
‘বাউত উৎসবে’ আসা কয়েকজন মৎস্যশিকারী বলেন, প্রতি বছর তাঁরা এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। বিলে পলো নামার কথা শুনেই তাঁরা ছুটে এসেছেন মাছ ধরতে।
উপজেলা মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আলী আযম বলেন, চলনবিলের ঐতিহ্য ‘বাউত উৎসব’কে টিকিয়ে রাখতে সরকারি স্বীকৃতির উদ্যোগ নেওয়া হবে।