বাগেরহাটের রামপালে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা
বাগেরহাটের রামপালে ফিরোজ শেখ (৪৮) নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। রামপাল উপজেলার কাষ্টবাড়িয়া এলাকায় আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রামপাল উপজেলার সদর ইউনিয়নের কাষ্টবাড়িয়া এলাকার মো. ফিরোজ শেখ ওই ইউনিয়নেরই সাবেক চেয়ারম্যান মো. জামিল হাসান জামুকে আজ বেলা সোয়া ১১টার দিকে কাদিরখোলার বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে মোটরসাইকেলে করে বাড়িতে ফিরছিলেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফিরোজ কাষ্টবাড়িয়া বায়তুশ শরফ জামে মসজিদের সামনে পৌঁছালে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে সেখানে অবস্থান নিয়ে থাকা শ্রীকলস এলাকার বেল্লাল ব্যাপারী ও তার ছেলে বাকী ব্যাপারী এবং শাহাজান ব্যাপারী, ফারুক ব্যাপারী, হেমায়েত মোল্লা, মোশা মোল্লাসহ ৩৫ থেকে ৪০ জন লোক তার পথ রোধ করে। পরে চলন্ত মোটরসাইকেলে থাকা অবস্থায় পিটিয়ে তাকে রাস্তার উপর ফেলে দেয়। এরপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার মাথায় কোপাতে থাকে। মাথায় তিন থেকে চারটি কোপ লেগে তখন মাথার মগজ বের হয়ে যায়। এ সময় তার হাত ও পা ভেঙে মাটিতে ফেলে রাখে হামলাকারীরা। তার মোটরসাইকেলটিও ভেঙে ডোবায় ফেলে দেয় হামলাকারীরা। এরপর খবর পেয়ে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করতে গেলে হামলাকারীরা তাদের সেখানে যেতে দেয়নি। এতে ঘটনাস্থলে পড়ে থাকায় তার ব্যাপক রক্তক্ষরণ হয়। এ সময় মারপিট ঠেকাতে গিয়ে আলী আকবর নামের এক ব্যক্তিও গুরুত্ব আহত হন। পরে টহলে থাকা পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে দ্রুত খুলনায় পাঠানো হয়। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর দুপুর পৌঁনে ২টার দিকে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
মো. ফিরোজ শেখের মৃত্যু খবর এলাকায় পৌঁছালে তার স্বজনরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এ ঘটনার পর খবর পেয়ে রামপাল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামছুদ্দীন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এ সময় স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় শ্রী কলস এলাকার ডাবলু শেখ (২৮), ইউনুছ শেখ (৩০), সিরাজ শেখ (৫৪), কাষ্টবাড়িয়া এলাকার ফজলুর রহমান শেখ (৪০) ও এনছান উদ্দিনকে (৬০) আটক করে পুলিশ।
এদিকে ফিরোজ শেখের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ওই এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। উত্তেজিত লোকজন ইনাম শেখের দোকানসহ তিনটি বাড়ি ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সন্ধ্যায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
রামপাল থানা ওসি মোহাম্মদ সামছুদ্দীন বলেন, এ ঘটনায় ছয়জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।