বাস ধর্মঘট প্রত্যাহার, সোমবার থেকে নতুন ভাড়া
ডিজেল ও কোরোসিন তেলের দাম ২৩ শতাংশ বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে বাসভাড়া ২৭ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরপরই মালিকপক্ষ ধর্মঘট প্রত্যাহার করে বাস চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন। নতুন এই ভাড়া আগামীকাল সোমবার থেকে কার্যকর হবে।
আজ রোববার বিকেলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সঙ্গে পরিবহণ মালিকদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। রাজধানীর বনানীতে বিআরটিএ কার্যালয়ে এই বৈঠক হয়।
এতে বলা হয়, এখন থেকে দূরপাল্লায় বাসে প্রতি কিলোমিটারে ১.৮০ টাকা এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে বাসে ২.১৫ টাকা করে ভাড়া দিতে হবে যাত্রীদের। মিনিবাসের ক্ষেত্রে এই ভাড়া কিলোমিটারপ্রতি ১.৬০ টাকা থেকে বেড়ে হচ্ছে ২.০৫ টাকা। সবশেষ দূরপাল্লার বাসের ক্ষেত্রে ১.৩৯ টাকা এবং মহানগরের ক্ষেত্রে ১.৭০ টাকা ভাড়া ছিল।
এই হিসাবে দূরপাল্লার বাসের ভাড়া ২৭ শতাংশ এবং মহানগরীতে ২৬ দশমিক ৫ শতাংশ ভাড়া বাড়ছে।
এ ছাড়া বাসের সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকা এবং মিনিবাসে আট টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে সিএনজিচালিত বাসের ক্ষেত্রে এই ভাড়া প্রযোজ্য হবে না। এই ভাড়া শুধু ডিজেলচালিত বাসের জন্য।
আজকের বৈঠকে বিআরটিএর চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েতউল্লাহ, শ্যামলী পরিবহণের মালিক রমেশ ঘোষ, সোহাগ পরিবহণের মালিক ফারুক তালুকদার, কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
এসব ঘোষণা দিয়ে বিআরটিএর চেয়ারম্যান ও ভাড়া নির্ধারণী কমিটির সভাপতি নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, আজই হয়তো বর্ধিত বাস ভাড়া নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। নতুন ভাড়া আগামীকাল সোমবার থেকে কার্যকর হবে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েতউল্লাহ বলেন, আমরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিলাম।
গত বুধবার সরকার খুচরা পর্যায়ে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম প্রতি লিটার ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা করেছে। সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এরপর গত শুক্রবার ভোর থেকে সারা দেশে পণ্য ও যাত্রীবাহী সড়ক পরিবহণে ধর্মঘট শুরু করে মালিক ও শ্রমিকরা।
সেই ধর্মঘট আজ রোববার তৃতীয় দিনের মতো হয়েছে।
এর মধ্যে গতকাল বিকেল থেকে লঞ্চ চলাচলও বন্ধ করে দিয়েছেন মালিকরা। আজ বিকেল সাড়ে ৩টায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন লঞ্চ মালিকরা।
তবে বাংলাদেশ ট্রাক–কাভার্ডভ্যান, ট্যাংক লরি ও প্রাইম মুভার মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ আজ বিকেলে তেজগাঁও কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তাদের ধর্মঘট অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন। নেতারা বলেন, বর্ধিত তেলের দাম প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত তারা ধর্মঘট চালিয়ে যাবেন।
বাস ও লঞ্চে ধর্মঘটের ফলে চলাচলের জন্য মানুষকে ট্রেনের ওপর নির্ভর করতে হয়েছে। রেলওয়ে স্টেশনগুলোতে যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে।