বিশ্ববাসীর মঙ্গল কামনায় পাহাড়ে বৈসাবি উৎসব
বৈসাবি উৎসবে রং লেগেছে পাহাড়ে। শঙ্কামুক্ত মঙ্গলময় বিশ্ব কামনায় নতুন বছরকে বরণ এবং পুরোনো বছরকে বিদায় জানাতে বান্দরবানে সাঙ্গু নদীতে ফুল ভাসালেন চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা জনগোষ্ঠীর তরুণ-তরুণীরা। শিশু-কিশোর ও যুবক-যুবতীরাও ভিড় জমিয়েছিলেন নদীচরে বিজু ও বিষু উৎসবের এই আনন্দ আয়োজনে।
আয়োজকরা জানান, নতুন বছরকে বরণ এবং পুরোনো বছরকে বিদায় জানানোর সামাজিক এই উৎসবকে চাকমা সম্প্রদায় বিষু ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায় বিজু নামে পালন করে আসছে যুগযুগ ধরে। এবার তিন দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে পাহাড়ি পল্লীগুলোতে। উৎসবের প্রথমদিনে পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা জনগোষ্ঠীর তরুণ-তরুণীরা ভোর বেলায় ঘুম থেকে উঠে গ্রামে গ্রামে ঘুরে ফুল সংগ্রহ করেন। সংগ্রহের পর ফুলের একটি অংশ প্যাগোডায় গৌতম বুদ্ধের প্রার্থনায় ব্যবহার করেন। আরেকটি অংশ গঙ্গায় অবস্থানরত মায়ের চরণে বিশ্ববাসীর শান্তি ও মঙ্গলময় সুন্দর জীবন গড়তে নদীতে ফুল ভাসানো হয়।
চাকমা তরুণী সুচরিতা চাকমা ও শুভশ্রী চাকমা বলেন, ‘উৎসবের প্রথমদিনে নদীতে ফুল ভাসিয়ে পুরোনো বছরের যতসব অমঙ্গল ও দুঃখ-কষ্ট গ্লানি রয়েছে, সব ধুয়ে মুছে ফেলে পুরোনো বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে বরণ করা হয়। এটি আমাদের ঐতিহ্যগত উৎসব। যুগযুগ ধরেই আমরা তা পালন করে আসছি। এছাড়াও পাহাড়ি পল্লীগুলোতে বাড়িতে বাড়িতে চলে ঐতিহ্যবাহী পাচনসহ মজাদার সব খাবার তৈরি করে অতিথি আপ্যায়ন। বিহারগুলোতে ধর্মীয় প্রার্থনা, বয়স্কদের প্রণাম করে আর্শীবাদ গ্রহণ। এদিন দল বেঁধে বন্ধু-বান্ধব স্বজনরা ঘুরে বেড়ায়।’
বৈসাবি উৎসব আয়োজক কমিটির সাধারণ সম্পাদক কৃত্তিমান চাকমা বলেন, ‘বর্ষবরণ ও বর্ষ বিদায়ের এই উৎসবে তিন দিনব্যাপী নানান অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। নদীতে ফুল ভাসানো ছাড়াও চাকমাদের ঐতিহ্যবাহী খেলা নাটিং এবং বাঁশহরম প্রতিযোগিতা রয়েছে। সাংস্কৃতিক আয়োজনে মেতে ওঠে চাকমা পল্লীগুলো।’