‘বুলবুল’-এর প্রভাব কাটিয়ে স্বাভাবিক মোংলা বন্দর
ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’-এর দুর্যোগ কাটতে শুরু করায় বাগেরহাটের মোংলা বন্দরের পরিবেশ অনেকেটাই স্বাভাবিক হয়ে আসছে। ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত ৩ নম্বরে নেমেছে। এর ফলে মোংলা বন্দরে আজ রোববার রাত থেকেই দেশি-বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ আসা যাওয়ার কাজ শুরু হবে বলে জানান বন্দরের হারবার মাস্টার কমান্ডার শেখ ফখর উদ্দিন।
তবে ঝড়ে পশুর নদে একটি বিদেশি কোম্পানির ড্রেজিং কাজে ব্যবহৃত স্পিডবোট ডুবি, পৌর শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন এলাকায় ছোট বড় মিলিয়ে সহস্রাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ছাড়া শত শত গাছপালা উপড়ে পড়েছে।
গতকাল শনিবার রাত ৯টার পর ঝড়বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর থেকে আজ রোববার বিকেল পর্যন্ত শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে।
বন্দরের হারবার মাস্টার কমান্ডার শেখ ফখর উদ্দিন আরো বলেন, ‘আজ রাতেই জাহাজ আসা-যাওয়ার কাজ শুরুর পর সোমবার সকাল থেকেই বন্দরের অপারেশনাল কাজ পুরোদমে শুরু হবে। একইসঙ্গে বন্দরের পশুর চ্যানেল ও জেটিতে অবস্থানরত ১৪টি বিদেশি জাহাজে পণ্য ওঠা-নামার কাজ শুরু হবে।’
এ ছাড়া এদিন মোংলা বন্দরে আরো সাতটি বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ আসার শিডিউল রয়েছে বলে জানান হারবার মাস্টার ফখর উদ্দিন।
এদিকে ঝড়ের রাতে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া লোকজন খাবার পায়নি বলে অভিযোগ করেছে। চাঁদপাই ইউনিয়নের কানাইনগর সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নেওয়া পিঞ্জিরা বেগম, লাবনি বেগম, রাজু মুন্সি, বাবলু হাওলাদার, মো. শহিদ ও ফিরোজা বেগম ছাড়াও সিপিপির (সাইক্লোন পিপারনেস প্রোগ্রাম) স্বেচ্ছাসেবক অনিতা মজুমদার অভিযোগ করে বলেন, তাদের কানাইনগর সাইক্লোন শেল্টারে অবস্থান নেওয়া দুর্গতদের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি কোনো খাবারই আসেনি। সারা রাত না খেয়ে থেকে সকালে বাড়ি ফিরে গেছে প্রায় ২০০ নারী-পুরুষ।
এ ছাড়া একই অভিযোগ করেছে মহিলা কলেজের আশ্রয়কেন্দ্রে উঠা দুর্গতরাও। তারা জানায়, রাতে শুধু পৌরসভা থেকে খাবার দেওয়া হয়। সকালে কেউ কোনো খাবার দেয়নি, খোঁজও নেয়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাহাত মান্নান বলেন, ‘মোংলা বাজারের সব শুকনো খাবার কিনে নিয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি সবার মধ্যে বিতরণের করতে। তবে একটি কেন্দ্রে রেড ক্রিসেন্টের কর্মীরা সমস্যায় পড়ায় দুর্গতদের মধ্যে খাবার দিতে দেরি হয়। এটার জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। আমাদের আরো বেশি আন্তরিক হওয়ার দরকার ছিল।’

আবু হোসাইন সুমন, মোংলা