বে টার্মিনালের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ হতে পারে আজ
বে টার্মিনাল প্রকল্প নিয়ে আজ রোববার বিকেল ৩টায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। এই টার্মিনাল বাস্তবায়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বৈঠকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে বৈঠক অনুষ্ঠানের কথা নিশ্চিত করে বলেন, বৈঠকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে। বে টার্মিনাল কারা বাস্তবায়ন করবে, কিভাবে করবে, কোন কোন দেশ আগ্রহী এবং কারা কিভাবে করতে আগ্রহী—এসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
হালিশহর উপকূলে জেগে উঠা চরের সুবাদে সৃষ্ট চ্যানেল ব্যবহার করে বে টার্মিনাল বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে সেখানে ৬৮ একর জমি হুকুম দখল করা হয়েছে। সেইসঙ্গে ৮৭১ একর সরকারি খাস জমিও যুক্ত করার প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত। এর বাইরে সাগর ভরাট করে টার্মিনালের ভূমি হিসেবে ব্যবহার হবে। সব মিলিয়ে প্রায় আড়াই হাজার একর ভূমিতে বে টার্মিনাল প্রকল্পের পরিকল্পনা রয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের বর্তমান কার্যক্রম চলে সাড়ে চারশ একর ভূমিতে। চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ে পাঁচ গুণেরও বেশি এলাকায় বে টার্মিনালের কার্যক্রম চলবে। পাশাপাশি এখানে সাগরের গভীরতা বেশি থাকায় ১৪ মিটার ড্রাফটের জাহাজও সহজে ভিড়তে পারবে। বড় জাহাজাকে জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ভর করতে হবে না। বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ থেকে সময়ের অপচয় হবে না। কৃত্রিম চ্যানেলটির গভীরতা বাড়ানোর জন্য পরিচালিত ড্রেজিং থেকে পাওয়া মাটি ও বালি দিয়ে ভরাট করা হবে সাগর। একই সঙ্গে ব্রেক ওয়াটার নির্মাণ করে ঠেকানো হবে সাগরের জলোচ্ছ্বাস।
বৈঠকে এ টার্মিনালেকে রেলওয়ে নেটওয়ার্কে যুক্ত করার বিষয়টিও আলোচনা হতে পারে। সরকারের নির্দেশনার আলোকে এই টার্মিনাল নির্মাণের জন্য এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে প্রস্তাবনাও পাওয়া গেছে। বন্দর নির্মাণ ও পরিচালনায় অভিজ্ঞ বিশ্বের নয়টি শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি তাদের প্রস্তাবনা দিয়েছে। এর মধ্যে সিঙ্গাপুর পোর্ট অথরিটি, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই পোর্ট ওয়ার্ল্ড, ভারতের আদানি পোর্ট, সাংহাই পোর্ট এবং দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই গ্রুপ বে টার্মিনাল নির্মাণের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষ সব প্রস্তাবনার সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠিয়েছে বেশ আগে। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের নির্দেশনার আলোকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে তাদের কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছে। আজ বৈঠকে এসব প্রস্তাবনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার পর একটি চূড়ান্ত দিক-নির্দেশনা আসতে পারে।