অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ চার বছরের কম হওয়া উচিত : ড. ইউনূস
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আগামী নির্বাচনের সময়সীমা নির্ধারণ এখনই সরকারের ভাবনায় নেই। এটি নির্ভর করছে দেশের জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলো কী চায়, তার ওপর। শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে ক্ষতিগ্রস্ত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরুদ্ধার ও সংস্কার একটি বড় কাজ। সরকারের উদ্দেশ্য যত দ্রুত সম্ভব সংস্কার শেষে নির্বাচন দেওয়া। তবে এটি চার বছরের কম সময়ে সম্পন্ন হওয়া উচিত।
চলতি মাসে জাতিসংঘের কপ-২৯ সম্মেলনের ফাঁকে ড. ইউনূস আলজাজিরাকে একটি সাক্ষাত্কারে ড. ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের সামনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘গত ১৫ বছর ধরে আমাদের যে ব্যবস্থা ছিল—অব্যবস্থাপনা ও অপশাসন এবং আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসের কারণে বাংলাদেশ দুর্নীতিতে ডুবে গেছে।’ বিন্দু বিন্দু করে প্রতিটি খাতে সুব্যবস্থাপনা পুনর্নির্মাণ একটি বড় কাজ।
আগামী নির্বাচনের সঠিক সময় কখন হতে পারে, ভাবনায় এমন কোনো আনুমানিক সময় আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, ‘না। এ বিষয়ে আমার মাথায় কোনো কিছু নেই।’
অন্তর্বর্তী সরকারের সময়সীমা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তী সরকার, স্থায়ী সরকার নই। নিয়মিত সরকারের মেয়াদ পাঁচ বছর। তবে, নতুন সংবিধানে সরকারের মেয়াদ সম্ভবত চার বছর হতে পারে। কারণ, জনগণ মেয়াদ কম চায়। সুতরাং এটি (অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ) চার বছরের কম হওয়া উচিত, এটা নিশ্চিত। তবে এটি আরও কম হতে পারে। এটি মানুষ কী চায়, রাজনৈতিক দলগুলো কী চায় তার ওপরে নির্ভর করছে।’
‘যদি রাজনৈতিক দলগুলো চায় এটি (সংস্কার) ভুলে যাও, নির্বাচন দাও। তাহলে তা-ই করা হবে’, যোগ করেন ড. ইউনূস।
আপনি কি তাহলে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান হিসেবে চার বছর থাকতে পারেন, এমন প্রশ্নের জবাবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমি তা বলিনি, চার বছর। আমি বলেছি, এটি সর্বোচ্চ মেয়াদ হতে পারে। কিন্তু, এটি আমাদের উদ্দেশ্য নয়। আমাদের উদ্দেশ্য যত দ্রুত সম্ভব এটি সম্পন্ন করা।’
আপনি কি নির্বাচনে লড়বেন, এ প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেন, ‘না। আমি রাজনীতিবিদ না। এতদিন আমি যা করে এসেছি, তা-ই আমি উপভোগ করেছি। আমার জীবনের শেষ পর্যায় পর্যন্ত আমি এটি পরিবর্তন করব না।’
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমরা ভারতীয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, আপনারা তাকে থাকতে দিয়েছেন, ভালো। তবে দয়া করে নিশ্চিত করুন, সে যেন আমাদের জন্য সমস্যা তৈরি করতে না পারে।’