ভুয়া ডিবি ঠেকাতে পোশাকে যুক্ত হচ্ছে কিউআর কোড
পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) ভুয়া পোশাক পরিধান করে নানা সময়ে অপরাধ সংগঠিত হয়। এতে ভুক্তভোগী হয় সাধারণ মানুষ। ফলে, সংস্থাটি তাদের পোশাকে প্রযুক্তিসম্পন্ন কুইক রেসপন্স কোড বা কিউআর কোড ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমাতে এবং আসল-নকল ডিবি চিনতে পোশাক নিয়ে নতুন এ চিন্তা করা হয়েছে বলে এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন ডিবির প্রধান, অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ‘আমাদের ডিবির যে পোশাক আছে, সে পোশাকই থাকবে। কেবল সেখানে যুক্ত করা হচ্ছে প্রযুক্তিসম্পন্ন কুইক রেসপন্স কোড বা কিউআর কোড। এ কোড ব্যবহার করার ফলে ডাকাত, অপহরণকারী বা ছিনতাইকারীরা এরপর ডিবির পোশাক পরে অপরাধ করতে ভয় পাবে। তাতে করে সাধারণ মানুষের উপকার হবে।’
সাধারণ মানুষ আসল-নকল ডিবি কীভাবে চিনবে, এমন প্রশ্নের জবাবে হাফিজ আক্তার বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে এসব ব্যাপারে কাজ শুরু করেছি। পোশাকও প্রস্তুত করতে দেওয়া হয়েছে। কিউআর কোড সংক্রান্ত একটি মুঠোফোন অ্যাপস থাকবে। যেটি দিয়ে কিউআর কোড স্ক্যান করলে ওই পোশাক পরিহিত ডিবি সদস্যের পুরো পরিচয় বের হয়ে আসবে। আর ভুয়া ডিবি হলে পোশাকের কোড স্ক্যান করলে ‘ইনভ্যালিড কিউআর কোড’ নামে একটি বার্তা দেখা যাবে। ফলে, তখন সাধারণ মানুষ বুঝতে পারবে, কোনটা আসল আর কোনটা নকল। এ পরীক্ষাটা সবাই করতে পারবে। এখন এর বাইরে আর কিছু বলা যাবে না। সামনে সব জানিয়ে দেওয়া হবে।’
দ্রুত সময়ের মধ্যে নতুনভাবে তৈরি এ পোশাক ডিবির সদস্যরা পাবেন জানিয়ে ডিবি প্রধান বলেন, ‘পোশাকে কোডটি সংযুক্ত হলে মানুষের ভীতি কেটে যাবে। যাদের পোশাকটি বা জ্যাকেটটি দেওয়া হবে তাদের পুরোপুরি তথ্য আগে থেকেই জমা থাকবে ডিবির নিজস্ব সার্ভারে। দ্রুতই আমরা সবাইকে এ পোশাক দিয়ে দেব।’
ডিবি সূত্র জানায়, গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা তাদের সাধারণ পোশাকের ওপর একটি হাতাকাটা জ্যাকেট পরে থাকেন। সেটির সামনের দিকে ডানে ইংরেজিতে ‘ডিবি’ লেখা থাকে। বাঁয়ে থাকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) লোগো। পেছনে ইংরেজিতে কেবলই ‘ডিবি, ডিএমপি’ লেখা থাকে।
হাফিজ আক্তার বলেন, ‘এখন আমরা যে ধরনের জ্যাকেট ব্যবহার করি, তা সহজেই অন্য স্থান থেকে তৈরি করে নিতে পারে অপরাধীরা। কিন্তু, নতুন প্রযুক্তিসম্পন্ন এ পোশাকটি যেকোনো স্থান থেকে তৈরি করার সুযোগ থাকবে না। ফলে, কেউ ডিবির পরিচয় দিয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করতে পারবে না।’
বিগত সময় দেখা গেছে, ডিবির পোশাক পরে নানা সময়ে বিভিন্ন অপরাধ সংগঠিত হয়। কখনও তারা ধরা পড়ে, কখনও পড়ে না। এ পোশাক ব্যবহার করে ভুয়া ডিবি সেজে ছিনতাই, ডাকাতি, অপহরণের মতো বড় বড় অপরাধ সংঘটিত হয়ে থাকে। কিন্তু, এসবের কিছুই জানে না ডিবির কর্মকর্তারা। ফলে এটা ডিবির ভাবমূর্তির জন্যও ভালো না। মূলত এসব চিন্তা থেকেই পোশাকে কিউআর কোড যুক্তের চিন্তা শুরু বলে জানালেন ডিবি প্রধান।