মধুপুরে নৌকায় ভোট না দিলে কেন্দ্রে যেতে মানা করলেন আ.লীগ নেতা
টাঙ্গাইলের মধুপুরে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে নৌকায় ভোট না দিলে কেন্দ্রে যেতে নিষেধ করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা। একই সঙ্গে ওই কেন্দ্রে কতো ভোটার, কতো ভোট পড়বে—তার সংখ্যাও উল্লেখ করে দেনে তিনি। ‘আমরা কিন্তু ভোট কেন্দ্রের আশেপাশেই অবস্থান করব’ বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি নৌকায় ভোট দিতে নারাজি থাকলে কেন্দ্র যেতে নিষেধ করেন।
আওয়ামী লীগের ওই নেতার নাম সাদিকুল ইসলাম সাদিক। তিনি মধুপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মির্জাবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান।
যদিও এ বিষয়ে সাদিকুল ইসলাম সাদিক এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘বক্তব্যটি বিরোধী পক্ষ এডিটিং করে আমার নামে কুৎসা রটিয়েছে।’ এমন বক্তব্য তিনি দেননি বলেও দাবি করেন।
মধুপুরের অরনখোলা ইউনিয়নের আমলীতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে গত বুধবার বিকেলে দেওয়া সাদিকুলের বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় আলোচনার এলাকায় ঝড় বইছে। এর ফুটেজ এ প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত আছে।
আগামী ১৫ জুন অরনখোলা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। এ উপলক্ষে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুর রহিমের নির্বাচনি সভায় সাদিকুল ইসলাম সাদিক ভোটারদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি আজকে বলে দিতে চাই, আমাদের এখানে ভোট হবে সারাদিন এবং নৌকা মার্কায় ভোট হবে। যারা নৌকায় ভোট দেবেন, তারাই কেন্দ্রে যাবেন। যারা নৌকায় ভোট দিতে নারাজ, এই উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় যারা বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন, দয়া করে কেন্দ্রে আসবেন না।’
সাদিকুল আরও বলেন, ‘আমরা কিন্তু ভোট কেন্দ্রের আশেপাশেই অবস্থান করব। এই কেন্দ্রের মোট দুই হাজার ৪০০ ভোটের মধ্যে দুই হাজার ভোট কাস্ট হবে। এই দুই হাজার ভোটই নৌকায় পেতে চাই।’
তার এই বক্তব্য সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ভোটার মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এই বক্তব্যে নির্বাচনী এলাকায় সমালোচনার ঝড় বইছে। আওয়ামী লীগের এই নেতা গত মঙ্গলবার উপজেলার আউশনারা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত গোলাম মোস্তফার নির্বাচনী সভাতেও একই ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে মধুপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা খন্দকার মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি। তবে এখনও এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগামী ১৫ জুনের নির্বাচনে টাঙ্গাইলে ২১টি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে মধুপুর উপজেলায় আটটি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ হবে।’
অভিযোগ কেন দেওয়া হয়নি এমন প্রশ্নে অরনখোলা ইউনিয়নের অপর চেয়ারম্যানপ্রার্থী লস্কর আলী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নির্বাচন উপলক্ষ্যে এলাকায় যে কাজ করছে, তাতে তাদের ভোট কমছে। এতে আমাদের পক্ষে মানুষ বেশি আসছে। সেজন্য আমরা অভিযোগের দিকে যায়নি।’