মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে আসামি ছিনতাই
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার একটি দুর্গম চরের বাড়ি থেকে গত শনিবার মো. কাশেম ব্যাপারী (৪৫) নামের এক পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। এর মধ্যেই পুলিশ সদস্যদের মুখে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে আসামিকে ছিনিয়ে নেয় পরিবারের নারী সদস্যরা। এ সময় সুমন নামের এক সহকারী উপপরিদর্শককে (এএসআই) মারাত্মকভাবে জখম করা হয়। বর্তমানে তিনি স্থানীয় একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন।
উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন চরকাজল ইউনিয়নের চরশিবা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় আহত পুলিশ সদস্য বাদী হয়ে গলাচিপা থানায় গতকাল রোববার বিকেলে মামলা করেছেন। এরপরই মরিচের গুঁড়া ছিটানোর অভিযোগে হাসিনা বেগম (৩৫) নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ছাড়া পলাতক ও ছিনিয়ে নেওয়া আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য পটুয়াখালী ও পাশের ভোলা জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম আর শওকত আনোয়ার ইসলাম।
মামলার বরাত দিয়ে ওসি শওকত আনোয়ার ইসলাম জানান, ভোলার চরফ্যাশনের একটি জিআর-২৫৬-৯৯ মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামি কাশেম ব্যাপারী গলাচিপার চরকাজল ইউনিয়নের বড়শিবা গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান করছে। পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত শনিবার বিকেলের দিকে কাশেম ব্যাপারীকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় কাশেমের চিৎকারে বাড়ির নারী-পুরুষেরা একত্রিত হন। পুলিশ কিছু বুঝে ওঠার আগেই মরিচের গুঁড়া নিয়ে ছুটে এসে হাসিনা বেগম নামের এক নারী এএসআই সুমনসহ পুলিশের অন্য সদস্যদের চোখে ছিটিয়ে দেন। এ সময় জড়ো হওয়া ১০ থেকে ১২ জন মিলে পুলিশ সদস্যদের এলোপাতাড়ি পিটিয়ে মারাত্মক আহত করেন। মরিচের গুঁড়া ছিটানোর পরও রক্ষা না পাওয়ায় আসামি কাশেম ব্যাপারী সুপারি কাটার জাঁতি দিয়ে এএসআই সুমনের মাথায় আঘাত করে পালিয়ে যান। এ ছাড়া অন্যরা পুলিশ কনস্টেবল দিদারুলকে পিটিয়ে, টেনে হিঁচড়ে ইউনিফর্ম ছিড়ে ফেলে মারাত্মক আহত করেন। এ সময় মাইনুল নামের আরেক কনস্টেবলও আহত হন।
পুলিশ সদস্যদের আহত হওয়ার খবর পেয়ে গলাচিপা থানার ওসি এমআর শওকত আনোয়ার ইসলাম দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে আহত পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করেন এবং গলাচিপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন। মাথায় আঘাত পাওয়া এএসআই সুমন বর্তমানে চিকিৎসাধীন। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে কর্মস্থলে ফিরে গেছেন।
ওসি বলেন, ‘পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালানোর ঘটনায় কাশেম ব্যাপারীকে প্রধান আসামি করে আরেকটি মামলা করা হয়েছে। পলাতক কাশেমকে ধরতে পুলিশের একাধিক টিম অভিযান অব্যাহত রেখেছে। এরই মধ্যে যেই নারী পুলিশের চোখে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়েছিলেন, তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
ওসি আরো বলেন, ‘খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কাশেম ব্যাপারী এলাকায় একজন দাঙ্গাবাজ লোক। তিনি বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। আশা করি, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হব।’