মামলাজট কমাতে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির ওপর জোর দিতে হবে: আইনমন্ত্রী
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2022/03/06/law-minister.jpg)
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বিদ্যমান মামলাজট কমাতে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতির ওপর জোর দিতে হবে। এজন্য বিচারপ্রার্থী জনগণসহ আইনজীবীদের এ পদ্ধতি ব্যবহারে উৎসাহ দিতে হবে।
আজ রোববার বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট কর্তৃক জিপি ও পিপি (পাবলিক প্রসিকিউটর) গণের জন্য ভার্চুয়ালি আয়োজিত ২৩তম বিশেষ প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতাকে অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্য ও শোষণ হতে মুক্তি এবং সার্বিক উন্নয়নের সোপান হিসেবে দেখতে চাইলে সর্বক্ষেত্রে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা অপরিহার্য। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্বাস করতেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ছাড়া এই ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। সে কারণেই তাঁর দেওয়া সংবিধানে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা সুস্পষ্টভাবে বিধৃত করা হয়েছে। তবে বঙ্গবন্ধু এমন এক স্বাধীন বিচার বিভাগের স্বপ্ন দেখেছিলেন, যেখানে বিচারপ্রার্থী মানুষ স্বল্প খরচে, সহজে ও দ্রুত ন্যায়বিচার পাবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপূরণে স্বাধীন ও বিশ্বমানের বিচার বিভাগ গড়ে তোলার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
মন্ত্রী বলেন, বিচারক, জিপি, পিপি, আইনজীবী, আদালতের কর্মচারীসহ বিচার প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালনরত সকলকে নিয়েই কিন্তু বিচার বিভাগ। তাই বিচার বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ অংশীজন (স্টেক হোল্ডার) হিসেবে দেওয়ানি ও ফৌজদারি উভয় বিষয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় জিপি ও পিপিদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
জিপি ও পিপিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, শুধু সরকারি মামলায় সরকারকে যথাযথভাবে ‘রিপ্রেজেন্টেশন’করা নয়, স্ব স্ব অফিসের সঠিক ব্যবস্থাপনা, সঠিকভাবে মামলার ফাইল পরিচালনা করা, সরকারসহ সরকারি স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বিতভাবে মামলা পরিচালনা করে বিচারে প্রবেশাধিকারকে বিস্তৃত করার ক্ষেত্রে সেবার মানসিকতা নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে। সর্ব অবস্থায় আদালতের নির্দেশনা পালন করে আদালতের মামলা ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়াকে সহায়তা করতে হবে।
আনিসুল হক বলেন, কোনো কোনো জিপি ও পিপি বিভিন্ন অজুহাতে আদালতে সময়ের দরখাস্ত দাখিল করে থাকেন। সরকারি আইন কর্মকর্তা হিসেবে মামলা দ্রুত নিস্পত্তি করতে হলে আপনাদেরকে অবশ্যই আদালতের সময় ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সকল নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। আদালতে সঠিক সময়ে সাক্ষী হাজিরসহ নির্ধারিত তারিখে সাক্ষী পরীক্ষা করার ক্ষেত্রে আপনাদেরকে সচেষ্ট হতে হবে। এক্ষেত্রে কোন ঢিলেঢালা বা গড়িমসি মনোভাব কাম্য নয়। মনে রাখতে হবে, রাষ্ট্রের পক্ষে ওকালতি করার জন্যই সরকারি কৌঁসুলিদের নিয়োগ দেওয়া হয়। তাই সরকারি কৌঁসুলিদের দ্বারা যদি রাষ্ট্রের স্বার্থ সংরক্ষিত না হয়; তারা যদি ঠিকমতো কাজ না করেন, বিচারপ্রার্থীরা যদি ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হন, বিচার যদি বিলম্বিত হয়, তবে তা হবে দুঃখজনক।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার এবং ইনস্টিটিউটের পরিচালক গোলাম কিবরিয়া বক্তৃতা করেন।