মুক্তিপণে মুক্ত ৮ জেলে, পুলিশের দাবি উদ্ধার
সাত দিন বনদস্যুদের হাতে জিম্মি থাকার পর এক লাখ ৮০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন আট জেলের পরিবারের সদস্যরা। অপরদিকে, পুলিশের দাবি—এসব জেলেকে উদ্ধার করেছেন তারা।
অপহরণের শিকার জেলেদের পরিবারের সদস্যরা জানান, গতকাল মঙ্গলবার রাতে মুক্তিপণের টাকা পেয়ে আট জেলেকে বনবিভাগের হরিণটানা টহল ফাঁড়িতে ছেড়ে দেয় বনদস্যুরা। ছাড়া পেয়ে রাত ২টার দিকে হরিণটানা টহল ফাঁড়ির ট্রলারে করে আজ বুধবার সকাল ৮টার দিকে চাঁদপাই রেঞ্জ অফিসে আসেন তাঁরা। এরপর মোংলা থানা পুলিশ আজ দুপুর ১২টার দিকে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়।
জানা গেছে, গত ১৩ ডিসেম্বর রাত ১০টার দিকে সুন্দরবনের হরিণটানা টহল ফাঁড়ি সংলগ্ন কলামূলো, আলকি, তাম্বুলবুনিয়া ও হরমলসহ বিভিন্ন খালে কাকড়া ও বড়শি দিয়ে মাছ ধরা আট জেলেকে মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণ করে নিয়ে যায় একদল বনদস্যু।
মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়িয়ে আনা জেলেদের পরিবারের সদস্য নাসির শেখ, সোহরাব শেখ, ফারুক খান ও শেখ মো. মারুফ বিল্লাহ জানান, সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জ কার্যালয় থেকে বৈধ পাস নিয়ে গত ১৩ ডিসেম্বর সুন্দরবনে কাকড়া ও বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে যান জেলেরা। এসব জেলে বনের বিভিন্ন খালে কাঁকড়া ও মাছ শিকারকালে একদল বনদস্যু তাদের ওপর হামলা ও লুটপাট চালায়। পরে তাদের মারধর করে জেলে নৌকার মাছসহ অন্যান্য মালামাল লুটে নেওয়ার পাশাপাশি প্রতি নৌকা থেকে একজন করে জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যায় এ বনদস্যু বাহিনী। ওই বাহিনীর কাছে সাত দিন জিম্মি থাকার পর এক লাখ ৮০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন তাঁরা।
মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পাওয়া জেলেরা হলেন খুলনার বটিয়াঘাটার বুজবুনিয়া গ্রামের মৃত জহুর শেখের ছেলে মো. আকরাম শেখ (৪২), বুজবুনিয়ার মৃত মোশারেফ খানের ছেলে মো. রফিকুল ইসলাম খান (৩৫), খুলনার রূপসার আলাইপুর গ্রামের মুসা শিকদারের ছেলে ওলি শিকাদার (৪৮), বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার ঝনঝনিয়া গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে বখতিয়ার ব্যাপারী (৩৫), মোংলার দক্ষিণ হলদিবুনিয়া গ্রামের নাসির উদ্দিন শেখের ছেলে আনিস শেখ (২২), একই গ্রামের সোহরাব শেখের ছেলে মিলন শেখ (২৩), বৈদ্যমারী গ্রামের জামাল ব্যাপারীর ছেলে শুকুর আলী ব্যাপারী (৩০) এবং একই গ্রামের আলতাফ ব্যাপারীর ছেলে মনির ব্যাপারী (৩৬)।
অপহৃত জেলে ফারুক খান বলেন, ‘আট বনদস্যু আমাদের যখন অপহরণ করে তখন তাদের কাছে দুটি পাইপগান, ছয়টি রামদা ও বেশ কিছু দেশি মোটা লাঠিসহ দুটি ডিঙ্গি নৌকা ছিল। বনদস্যুদের কাছে এখনও ৩০ থেকে ৩৫ জন জেলে জিম্মি হয়ে রয়েছেন।’
মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুল ইসলামের দাবি, পুলিশই এসব জেলেকে উদ্ধার করেছে।