মুন্সীগঞ্জে উত্ত্যক্তের অভিযোগে সালিশ, প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত ৩
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায় বিচার সালিশে প্রতিপক্ষের হামলায় মো. ইমন হোসেন (২২), মো. সাকিব হোসেন (১৯) ও আওলাদ হোসেন মিন্টু (৪৭) নামের তিনজন হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও চারজন। উপজেলার উত্তর ইসলামপুর এলাকায় গতকাল বুধবার রাত পৌনে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত ইমন হোসেন উত্তর ইসলামপুর এলাকার কাশেম পাঠানের ছেলে, সাকিব হোসেন একই এলাকার বাচ্চু মিয়ার ছেলে এবং আওলাদ হোসেন মিন্টু একই এলাকার বাসিন্দা। মিন্টু মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, উত্যক্তের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল বুধবার রাত ১০টার দিকে উত্তর ইসলামপুর এলাকার জামালের দোকানের সামনে স্থানীয় সৌরভ ও ইমনের লোকজন নিয়ে সালিশি বৈঠক বসে। এ সময় মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী আওলাদ হোসেন মিন্টু দুপক্ষের মধ্যে বিরোধ মিমাংসা করে দেন। কিন্তু সৌরভের বাবা জামাল বিচার না মানলে সেখানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে রাত পৌনে ১২টার দিকে সৌরভ ও ইমন গ্রুপের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় মিন্টু, ইমন ও সাকিব ছুরিকাহত হন। ওই তিনজনের পেটে ও বুকে জখম করা হয়।
তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা। এ সময় সেখানকার চিকিৎসক ইমনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত মিন্টু ও সাকিবকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। এর মধ্যে দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ঢামেকের চিকিৎসক সাকিবকে মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে, আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢামেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আওলাদ হোসেন মিন্টু মারা গেছেন বলে স্বজনরা নিশ্চিত করেছেন।
মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ফেরদৌস জানান, গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনজনকে হাসপাতালে আনা হয়। তাদের মধ্যে এক যুবক মারা যান। অপর কয়েকজন গুরুতর আহত ছিলেন। গুরুতর কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, সালিশি বৈঠকে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে তিনজন গুরুতর আহত হন। মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে আনার পর একজন মারা যান। আরেকজন মারা গেছেন ঢামেক হাসপাতালে। অপর একজন ঢামেকে চিকিৎসাধীন।
ওসি আরও জানান, ঘটনার পরই উত্তর ইসলামপুর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ওই এলাকা থেকে পাঁচজনকে আটক করা হয়। বর্তমানে সেখানকার পরিস্থিতি শান্ত। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
অন্যদিকে আওলাদ হোসেন মিন্টুর মৃত্যুর খবর আজ বৃহস্পতিবার সকালে নিশ্চিত করেছেন মুন্সীগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাম্মেল হক।