‘মেয়র সাদিকের বিরুদ্ধে মামলা অনেক বড় ষড়যন্ত্র’
বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহসহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর গুলি ও পুলিশি হামলার প্রতিবাদে বরিশালে সমাবেশ করেছে মহিলা আওয়ামী লীগ। আজ শুক্রবার বিকেলে নগরীর সোহেল চত্বরে বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে জেলা ও মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগ এই প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে।
জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খালেদা হকের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন সহসভাপতি শ্যামলী সাহা, মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কোহিনুর বেগম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নিগার সুলতানা হনুফা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর গায়েত্রী সরকার পাখি, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক শাহানাজ পারভীন মিতা, সংরক্ষিত কাউন্সিলর সালমা আক্তার শিলা প্রমুখ।
সমাবেশে নিগার সুলতানা হনুফা বলেন, ‘ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ইউএনও গুলি চালিয়েছেন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর। ওই ইউএনওর যেখানে বিচার হওয়া উচিত, সেখানে এখন মামলা হচ্ছে সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহসহ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। মেয়র যেখানে নিজে আহত সেখানে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হওয়া অনেক বড় ষড়যন্ত্র। আমরা অবিলম্বে এই মামলা প্রত্যাহার করে ইউএনওর বিচার দাবি করছি।’
ইউএনও করা মামলার অভিযোগে জানা যায়, জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের পক্ষে লাগানো ব্যানার, ফেস্টুন রাতের আঁধারে ছিঁড়ে ফেলায় বাধা দিতে গেলে গত বুধবার রাতে তাঁর সরকারি বাসভবনে হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় বাসভবনে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কয়েকজন আনসার সদস্য আহত হন। ছাত্রলীগের দাবি, এ সময় তাঁদের অন্তত ৩০ জন নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হন।
এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, শোকের মাসে পরিকল্পিতভাবে একটি শহরকে অশান্ত করতে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটানো হয়েছে। ইউএনওর বাসায় কেউ হামলা করেনি। এটি পরিকল্পিত ঘটনা। এর বিচার বিভাগীয় তদন্ত হওয়া দরকার। গত বুধবার রাতের ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল ভোর সাড়ে ৫টা থেকে বরিশালের অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার রুটে বাস চলাচল বন্ধ ছিল। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বরিশাল থেকে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার বাস চলাচল শুরু হয়।
ইউএনও ও পুলিশের করা দুটি মামলাতেই প্রধান আসামি করা হয়েছে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে। তাঁর নির্দেশে হামলার ঘটনা ঘটে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ছাড়া মামলাগুলোতে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ৯৪ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরুল ইসলাম।
সরকারি কাজে বাধা প্রদান ও হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করে গুলিবর্ষণের অপরাধে পুলিশের করা মামলার বাদী উপপরিদর্শক (এসআই) শাহজালাল মল্লিক। অপর মামলার বাদী বরিশাল সদর উপজেলার ইউএনও মুনিবুর রহমান।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের ২১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ সাইয়েদ আহম্মেদ মান্না, বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাজ্জাদ সেরনিয়াবাত, আতিকুল্লাহ মুনিম, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, সাংগঠনিক সম্পাদক রাজীব হোসেন খান, মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিমল চন্দ্র দাস, মহানগর ছাত্রলীগ নেতা অনিক সেরনিয়াবাত, রইজ আহম্মেদ মান্না প্রমুখ।
গতকাল বুধবার রাতে বাসভবনে হামলার ঘটনায় ইউএনও মুনিবুর রহমান গতকাল বৃহস্পতিবার বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলায় ২৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া ৭০ থেকে ৮০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই শাহজালাল মল্লিক বাদী হয়ে পৃথক আরেকটি মামলা করেন।