মৌলভীবাজারে করোনায় তিনজনের মৃত্যু
মৌলভীবাজার জেলায় করোনার সংক্রমণ দিন দিন বেড়েই চলছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় কুলাউড়া উপজেলায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৯টি নমুনা পরীক্ষা করে ২৩ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষা অনুযায়ী, শনাক্তের হার ২৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ। অপরদিকে ৪৪ জনের অ্যান্টিজেন টেস্ট করালে ২১ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ৪৭ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
এ পর্যন্ত জেলায় তিন হাজার ১২১ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। সুস্থ হয়েছে দুই হাজার ৭১৮ জন। হাসপাতালের করোনা ইউনিটে করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছে ৫৫ জন। সরকারি হিসাবে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে জেলায় মৃত্যুবরণ করেছে ৩৬ জন।
জানা গেছে, কুলাউড়া উপজেলার উত্তর কুলাউড়া ও জয়চণ্ডী ইউনিয়নে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দুজন মৃত্যুবরণ করেছে। তারা মৌলভীবাজার ও সিলেটে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
অপরদিকে কুলাউড়া উপজেলার হোসেনপুর গ্রামের আকল মিয়ার ছেলে কাতারপ্রবাসী সুমন আহমদ করোনায় থাবায় মৃত্যুবরণ করেন। আজ রোববার সকাল পৌনে ১০টার দিকে সিলেটের উইমেন্স হাসপাতালে সুমন আহমদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি প্রায় ১৮ দিন ধরে জ্বর, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হয়ে ভোগছিলেন।
পরিবারের সদস্যরা জানান, সুমন স্বাভাবিক সময়ের মতো স্থানীয় চিকিৎসকদের পরামর্শে ওষুধ সেবন করেন। জ্বর না কমায় স্থানীয় এক চিকিৎসক উনাকে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন মনে করে আরও এক সপ্তাহের ওষুধ দেন। কিন্তু জ্বর না কমায় একপর্যায়ে তিনি কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন কুলাউড়া সরকারি হাসপাতালে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত ২৫ জুন মৌলভীবাজারের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি হন। এরই মধ্যে করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসায় উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ২৬ জুন তাঁকে নেওয়া হয় সিলেটের উইমেন্স হাসপাতালের করোনা ইউনিটে। অক্সিজেন লেবেল কমে যাওয়ায় উইমেন্স হাসপাতালের আইসিইউ বেডে লাইফ সাপোর্ট নিয়ে গত এক সপ্তাহ করোনার সঙ্গে লড়াই করে সুমন মারা যান।
অপরদিকে কুলাউড়া পৌরসভার উত্তর কুলাউড়ার বাসিন্দা হারিছ খান কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়ে চারদিন আগে মৌলভীবাজার আল হামরা হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শনিবার সকালে তিনি মারা যান।
অপরজন জয়চণ্ডী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার লৈয়ারহাই গ্রামের বাসিন্দা আজিজ উদ্দিন লবিকের স্ত্রী হেনা বেগম কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ১ জুলাই সিলেট নুরজাহান হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শনিবার দুপুরে তিনিও মৃত্যুবরণ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুলাউড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফেরদৌস আক্তার।