যেখানেই পানি জমবে সঙ্গে সঙ্গে আমাদের জানাবেন : মেয়র তাপস
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) কোথাও আমরা জলাবদ্ধ হতে দেব না- কাউন্সিলরদের এই প্রত্যয় নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
আজ বৃহস্পতিবার নগর ভবনের মেয়র হানিফ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত করপোরেশনের দ্বিতীয় পরিষদের ষষ্ঠ বোর্ড সভায় ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এই আহ্বান জানান।
ডিএসসিসির মেয়র বলেন, ‘আগামী বর্ষা মৌসুমকে লক্ষ্য রেখে জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছি। আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরলসভাবে কাজ করছেন। সেক্ষেত্রে, আপনারা সজাগ থাকবেন। বর্ষায় বৃষ্টি হলে, যে ওয়ার্ডের যেই জায়গায় পানি জমবে, আপনারা সঙ্গে সঙ্গে আমাদের জানাবেন। জলাবদ্ধতা নিরসনে উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।’
এ সময় করোনা মহামারির মধ্যে ডেঙ্গু মশা নিয়ন্ত্রণে প্রত্যয় নিয়ে কাজ করার ফলে সফলতা এসেছে উল্লেখ করে মেয়র তাপস বলেন, ‘আমরা প্রত্যয় নিয়ে কাজ করলে ইনশাল্লাহ জলাবদ্ধতা নিরসন করতে পারব।’
শীত মৌসুমে কিউলেক্স মশার উপদ্রব কিছুটা বাড়ে উল্লেখ করে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, ঢাকা শহরে এখনও এত বেশি ছোট ছোট বদ্ধজলাশয় রয়েছে যেগুলো আমাদের নাগালের বাইরে, আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। সুতরাং সেসব জায়গা থেকে মশক বৃদ্ধি পায়, বিস্তার লাভ করে, প্রজনন ছড়ায়।
যখনই মশক নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত কীটনাশকের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়, সঙ্গে সঙ্গে তা পরীক্ষা করানো হয় বলে জানান মেয়র। তিনি আরও বলেন, আমরা এতবার পরীক্ষা করাই যে, সবাই অতিষ্ঠ হয়ে যায়। কিন্তু তারপরও যখনই অভিযোগ পাই তখনই আমরা পরীক্ষা করাই। তাই, আমাদের এই মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে কি না- সেটা আপনাদের তদারকি করতে হবে।
যথাযথভাবে রাজস্ব আয় না হলে করপোরেশনের সক্ষমতা বাড়বে না উল্লেখ করে ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, আমাদের রাজস্ব আহরণের মূল ক্ষেত্র হলো হোল্ডিং ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্স। সুতরাং এই জায়গাতে আমাদের সবচেয়ে বেশি নজর দিতে হবে। আমরা রাজস্ব আহরণ বাড়াতে এরইমধ্যে টাস্কফোর্স গঠন করে দিয়েছি। তাই, আপনাদের নেতৃত্বে কোনো হোল্ডিং যাতে বাদ না পরে, কোনো প্রতিষ্ঠান যাতে ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া পরিচালিত না হয়, সে বিষয়টি খেয়াল রাখবেন।
ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন অজুহাতে ট্রেড লাইসেন্স করা থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করে জানিয়ে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, অনেক সময় দেখা যায়, বিরোধপূর্ণ কোনো স্থাপনায় কোনো প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হলে, বিরোধের অজুহাতে তারা ট্রেড লাইসেন্স করা থেকে বিরত থাকে। কিন্তু ট্রেড লাইসেন্সের সঙ্গে জমির স্বত্বের কোনো সম্পর্ক নেই। যে ব্যবসা করবে- ছোট হোক বড় হোক, তাঁকে ট্রেড লাইসেন্স করতেই হবে। বাণিজ্যিক অনুমোদন নিতে হবে।
পরে বোর্ড সভার আলোচ্যসূচি অনুযায়ী নয় সদস্যবিশিষ্ট ‘শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা এবং স্বাস্থ্যরক্ষা ব্যবস্থা’ বিষয়ক স্থায়ী কমিটি গঠন করা হয়।
৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মকছুদ হোসেনকে সভাপতি করে গঠিত কমিটির বাকি সদস্যরা হলেন- ২ নম্বর ওয়ার্ডের মো. আনিসুর রহমান, ৬২ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদ মোস্তাক আহমেদ, ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের শেখ মোহাম্মদ আলমগীর, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের আ স ম ফেরদৌস আলম, ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডের মো. আকবর হোসেন, ৪ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের ফারহানা ইসলাম ডলি, ৮ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নিলুফার রহমান ও ১৩ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের শাহিনুর বেগম।
এ সময় দক্ষিণ সিটির কাউন্সিলররা, দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. বদরুল আমিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. শরীফ আহমেদ, প্রধান প্রকৌশলী রেজাউর রহমান, সচিব মো. আকরামুজ্জামান, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হক, প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মুনান হাওলাদার, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. সিরাজুল ইসলাম, ডিএসসিসির বিভিন্ন বিভাগের দপ্তর প্রধান উপস্থিত ছিলেন।