রাজশাহীতে আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে আরও ২ মামলা
রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার বরখাস্ত হওয়া মেয়র আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি চাঁদাবাজি এবং অপরটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে দুজন ব্যক্তি পৃথকভাবে কাটাখালী থানায় এ মামলা দুটি করেন। পরে রাতেই মামলা দুটি রেকর্ড করা হয়। এর ফলে বরখাস্ত হওয়া মেয়র আব্বাসের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা দাঁড়াল তিনটি।
কাটাখালী থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পবা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কুদ্দুস বাদী হয়ে আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে ১০ লাখ টাকার চাঁদাবাজির মামলাটি করেন। অপর মামলাটি করেছেন কাটাখালী পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক জনি ইসলাম জনি। তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আব্বাসের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন।
আব্দুল কুদ্দুস তাঁর অভিযোগে উল্লেখ করেন, ২০১৯ সালের মার্চ মাসে কাটাখালী অটোস্ট্যান্ডসংলগ্ন এলাকায় মেয়র আব্বাসের বাসভবনের কাছে নিজ জায়গায় একটি মার্কেট নির্মাণ শুরু করেন তিনি। নির্মাণকাজ শুরুর পরপরই আব্বাস তাঁর কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দেওয়ায় আব্বাসের সশস্ত্র ক্যাডারেরা তাঁর নির্মাণ সামগ্রী ভাঙচুর করেন। ফলে তিনি আর মার্কেট নির্মাণ করতে পারেননি। এর পরেও আব্বাস চাঁদা পরিশোধের দাবি জানিয়ে হুমকি দিয়ে আসছিলেন। নিজ জায়গায় মার্কেট নির্মাণ করতে না পারায় আব্দুল কুদ্দুস বিপুল আর্থিক ক্ষতিতে পড়েন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেছেন।
অপরদিকে, দ্বিতীয় মামলার বাদী কাটাখালী পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক জনি ইসলাম তাঁর অভিযোগে বলেছেন, গত ২৩ নভেম্বর আব্বাসের ভাইরাল হওয়া অডিওতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকেই শুধু কটূক্তি করা হয়নি, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনকে উদ্দেশ করে অসম্মানজনক নানা কটূক্তি করা হয়েছে।
বাদী আরও উল্লেখ করেন, জাতীয় চার নেতার অন্যতম, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামানের ছেলে খায়রুজ্জামান লিটন। তিনি রাজশাহী সিটির মেয়র। তাঁর সম্পর্কে খারাপ উক্তি করায় দলের অনেক সম্মানহানি হয়েছে।
কাটাখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিদ্দিকুর রহমান জানান, দুটি এজাহার পেয়ে সেগুলো মামলা আকারে রেকর্ড করা হয়েছে। অন্য একটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারাগারে রয়েছেন আব্বাস আলী। এ দুটি মামলায় তাঁকে নতুন করে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আদালতে আবেদন জানানো হবে।
বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপনের বিরোধিতা করা মেয়র আব্বাস আলীর বক্তব্যের অডিও গত ১৯ নভেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে গত ২৫ নভেম্বর নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও রাসিক-এর ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুল মোমিন বাদী হয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানায় আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন। পরে রাজধানীর হোটেল রাজমনি ঈশা খাঁ থেকে আব্বাসকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
গত ১০ ডিসেম্বর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় আব্বাসকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। জেলা আওয়ামী লীগ আগেই কাটাখালী পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক পদ থেকে আব্বাসকে বহিষ্কার করে। বর্তমানে আব্বাস আলী রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।