রাষ্ট্রপতির সংলাপে যাবে না ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশও
বিএনপি, মোস্তফা মহসীন মন্টুর নেতৃত্বাধীন গণফোরামের একাংশ ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) পর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশও এবার নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন দলটির আমির ও চরমোনাইর পীর সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম। এ সময় তিনি নির্বাচনকালীন অন্তর্বতী জাতীয় সরকার গঠনের দাবি জানান।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইসি গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সংলাপ শুরু হয়েছে গত ২০ ডিসেম্বর।
ইসলামী আন্দোলনের আমির মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ২০১২ ও ২০১৭ সালের সংলাপে অংশ নিয়ে আমরা চরমভাবে হতাশ হয়েছি। ২০১২ সালের সংলাপে গঠিত ইসি ২০১৪ সালে ক্ষমতাসীনদের ইচ্ছের প্রতিফলন ঘটাতে একতরফা নির্বাচনের আয়োজন করেছে, যেখানে ১৫৩ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। আর ২০১৭ সালের সংলাপের পর গঠিত কমিশন ১০১৮ সালে একটি চরম বিতর্কিত ও অগ্রহণযোগ্য নির্বাচন করেছে, যাকে অনেকেই মধ্যরাতের নির্বাচন বলে আখ্যায়িত করে।
এসব কলঙ্কময় নির্বাচনের জন্য ইসিকে রাষ্ট্রপতির জবাবদিহিতার আওতায় না আনায় তারা হতাশ উল্লেখ করে আমির বলেন, অতীতের দুটি সংলাপে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে রাষ্ট্রপতির কাছে আমাদের গঠনমূলক প্রস্তাবগুলোর কোনোটাই মূল্যায়ন করা হয়নি। যে দল তাঁকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করেছে, তিনি সেই দলীয় স্বার্থের বাইরে যেতে পারেননি। অতীতের দুটি সংলাপ যেমন জনপ্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে, চলমান সংলাপও এর ব্যতিক্রম কিছু হবে না।
রেজাউল করিম বলেন, জন–আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে গিয়ে এমন একটি আবেদনহীন ও তাৎপর্যহীন সংলাপে অংশ নেওয়াটা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সঙ্গত মনে করে না।
রাষ্ট্রপতির সংলাপ বর্জন করে দলটি সাত দফা দাবি জানায়। তার মধ্যে রয়েছে দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় এবং নির্বাচনের সময় অন্তর্বতী জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে। ইসি গঠন আইন চলমান সংসদের মাধ্যমে নয়; রাজনৈতিক সংগঠন ও সমাজের স্টেকহোল্ডারদের সমন্বয়ে কনস্টিটিউশনাল কাউন্সিল গঠন করে তাদের মাধ্যমে ইসি গঠনসংক্রান্ত আইন প্রস্তুত করে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।
এ ছাড়া নির্বাচনে কোনো ধরনের অসততা, অদক্ষতা ও পক্ষপাত পাওয়া গেলে নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের অপসারণের ব্যবস্থা থাকতে হবে। জনপ্রশাসন, আইন, স্বরাষ্ট্র ও তথ্য মন্ত্রণালয়কে নির্বাচনকালীন ইসির হাতে ন্যস্ত করতে হবে। নির্বাচনকালীন সহিংসতার প্রতিটি অপরাধের বিচার নিশ্চিত করার দায়িত্ব ইসিকেই নিতে হবে। নির্বাচনী কর্মকর্তাদের দলীয় লেজুড়বৃত্তি করতে দেখলে তাঁদের স্থায়ীভাবে নির্বাচনি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে হবে।