শাহজালাল বিমানবন্দরে তৃতীয় দফায় বোমা উদ্ধার
রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের কনস্ট্রাকশন সাইটে চলমান পাইলিংয়ের সময় আরো একটি জেনারেল পারপাস (জিপি) বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শনিবার সকাল ১০টা ৫০ মিনিটের দিকে বোমাটি উদ্ধার করা হয়।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ এইচ এম তৌহিদ উল আহসান এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তৌহিদ উল আহসান বলেন, ‘এর আগেও বিমানবন্দরে পাইলিংয়ের সময় একই ধরনের আরো দুটি বোমা উদ্ধার করা হয়েছিল। আজকের বোমাটাও একই ওজনের। তিনটি বোমাই ১৯৭১ সালের বলে আমাদের ধারণা।’
এদিকে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বলা হয়েছে, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের কনস্ট্রাকশন সাইটে চলমান পাইলিংয়ের সময় শনিবার আনুমানিক সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে আরো একটি ২৫০ কেজি ওজনের জেনারেল পারপাস (জিপি) বোমা পাওয়া যায়। বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি বঙ্গবন্ধুর প্রশিক্ষিত বোমা ডিসপোজাল দল আধুনিক যন্ত্রপাতিসহ দ্রুততার সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছে বোমাটি নিষ্ক্রিয় করে। পরবর্তীতে বোমাটি ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় সতর্কতার সঙ্গে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। উল্লেখ্য যে, বোমা বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পাওয়া আগের বোমাগুলোর মতো এই বোমাটিও ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভূমিতে নিক্ষেপ করা হয়েছিল।
এর আগে গত ৯ ও ১৪ ডিসেম্বর একই কনস্ট্রাকশন সাইটে একই ধরনের আরো দুটি বোমা পাওয়া যায়। ওই দুটি বোমাও আজ শনিবার পাওয়া বোমাটির মতোই। দুটি বোমাই ছিল ২৫০ কেজি ওজনের। পরে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষিত বোমা ডিসপোজাল দল বোমা দুটি নিষ্ক্রিয় করে। পরবর্তীতে নিরাপদ স্থানে বোমাটি ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় সর্তকতার সঙ্গে বিমান বাহিনী ঘাঁটি পাহাড় কাঞ্চনপুরের রসুলপুর ফায়ারিং রেঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয়।
দেশের সব বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প উদ্বোধন ও ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিমানবন্দরের মূল টার্মিনালের দক্ষিণ পাশে ২১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হবে সুপরিসর এই তৃতীয় টার্মিনাল। এই অর্থ ব্যয়ের একটি অংশ প্রকল্প সহায়তা হিসেবে দেবে জাইকা। বাংলাদেশ সরকার বাকি অর্থের যোগান দেবে।
এই প্রকল্পের আওতায় একটি প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল বিল্ডিং, রাস্তা, কার পার্কিং, কার্গো কমপ্লেক্স, পার্কিং অ্যাপ্রোনসহ আরো অন্যান্য স্থাপনা তৈরি করা হবে।
তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ কাজ শেষ হতে সময় লাগবে চার বছর। এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে বছরে প্রায় দুই কোটি যাত্রী চলাচলের সুযোগ পাবে।
এই প্রকল্পের একটি অংশে কাজ করবে কোরিয়াভিত্তিক স্যামসাং সিঅ্যান্ডটি করপোরেশন। তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ শেষ হলে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এ অঞ্চলের সেরা বিমানবন্দরে পরিণত হবে বলে আশা করছে সরকার।
গত ৯ আগস্ট শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ কাজের অগ্রগতি ও বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনালের নবনির্মিত ভবন পরিদর্শনকালে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী জানান, প্রকল্পের ৬.৪ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ২০২৩ সালের জুনের মধ্যেই নির্মাণ কাজ শেষ করে তা যাত্রীদের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করা সম্ভব হবে।