সরকারকে সরাতে সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছেন। সকল অন্যায়কে প্রতিহত করতে হলে, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হলে, জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হলে, এই অবৈধ সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে সবাইকে, সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
রাজধানীর নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত শোভাযাত্রার উদ্বোধনী বক্তব্যে মির্জা ফখরুল আজ শনিবার বিকেল পৌনে চারটার দিকে একথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই অবৈধ সরকারের দিন শেষ। এখন জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। অন্যথায় সকল স্বৈরাচারের যে পরিণতি হয়েছে, আপনাদেরও একই পরিণতি হবে। এখনও সময় আছে পদত্যাগ করুন। নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। না হলে পালানোর পথ পাবেন না।
ফখরুল আরও বলেন, আজ আমাদের কথা বলার স্বাধীনতা নেই, গণতান্ত্রিক অধিকার নেই, নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচন করার অধিকার নেই। আমাদের সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে, এ ফ্যাসিবাদী সরকার।
এসময় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আমরা এ দেশকে যুদ্ধ করে স্বাধীন করেছি। যখন বাংলার জনগণকে একা ফেলে আজকের আওয়ামী লীগ চলে গেছে। তখন জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে। জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন, এটা কেউ মুছে ফেলতে পারবেন না।
মির্জা আব্বাস বলেন, জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে বসে থাকেননি। তিনি অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছেন। এমনকি দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যখন দেশের গণতন্ত্র ও কথা বলার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে, তখন আবার দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছেন।
আব্বাস আরও বলেন, আজ বিভিন্ন আইন করে দেশের মানুষের মুখ চেপে ধরা হয়েছে। দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে মানুষকে খাবারে কষ্ট দিচ্ছে। আবার এক মন্ত্রী বলছে, দেশে গ্যাসের দাম বাড়বে। কেমন বেহায়া আওয়ামী লীগ সরকার।
স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এই স্বাধীনতা দিবস যখন আমরা পালন করি, সেই স্বাধীনতা দিবসের সাথে জিয়াউর রহমানের নাম ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম বিদ্রোহ করেছেন। এর মাধ্যমে স্বাধীনতার যুদ্ধ শুরু হয়, দেশ স্বাধীন হয়। যারা আজ ক্ষমতায় আছে তারা দেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করছে। তারা দেশের ইতিহাসকে বিকৃত করছে। এই আওয়ামী লীগ বারবার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করে চলছে।
মোশাররফ আরও বলেন, স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে রক্ষীবাহিনী তৈরি করে মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছে, দেশের সব রাজনৈতিক দলকে বিলুপ্ত করেছে। এবার তারা ক্ষমতায় এসে আবার দেশের মানুষের কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়েছে।
বিএনপির এ নেতা বলেন, এ সরকারকে বিদায় করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। এই হোক আমাদের আজকের শপথ।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম বলেন, মার্চ মাস আওয়ামী লীগের সারেন্ডারের মাস, শহীদ জিয়ার বিদ্রোহ ও স্বাধীনতা ঘোষণার মাস। তাই প্রশাসনকে বলবো, আমাদের দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করছেন, সাবধান হয়ে যান। পারলে যারা জনগণের টাকা চুরি করছে, তাদের গ্রেপ্তার করেন। না হলে আর কিছুদিন পর আমরা তাদের ধরে আইনের আওতায় সোপর্দ করবো।
আবদুস সালাম আরও বলেন, ধৈর্যের সীমা আছে। অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে চিকিৎসা করতে দিন। পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। ৯০তে বেগম জিয়ার নেতৃত্বে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছি। আবার তারেক রহমানের নেতৃত্বে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবো।
ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান বলেন, শেখ হাসিনা ভোট নিয়ে ক্ষমতায় আসেনি। সে ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছে। সে বুঝতে পেরেছে আর কখনও ভোট নিয়ে ক্ষমতায় আসতে পারবে না।
আমান উল্লাহ আমান আরও বলেন, মেজর জিয়ার ঘোষণা, স্বাধীনতার ঘোষণা। তারই উত্তরসূরি খালেদা জিয়া ৯ বছর আন্দোলন করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছেন। এবার তারেক রহমান গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
আমান উল্লাহ আমান বলেন, জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন ভয় পাননি, খালেদা জিয়া গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছেন, ভয় পাননি৷ বাংলাদেশের সব আন্দোলন রাজপথে ফয়সালা হয়েছে। এবারের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলনের ফয়সালাও হবে রাজপথে, তারেক রহমানের নেতৃত্বে।