সাংবাদিক হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন
বরিশালের মুলাদী উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মনির হোসেন রাঢ়ী হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাসেল রাঢ়ীর সাজা পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ রোববার বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি মো. জাকির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে আসামি পক্ষে ছিলেন এসএম শাহজাহান, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত, রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী ছিলেন লিগ্যাল এইডের প্যানেল আইনজীবী ব্যারিস্টার রিমি নাহরিন।
রায়ের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত ও ব্যারিস্টার রিমি নাহরিন সাংবাদিকদের বলেন, ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিলের শুনানি শেষে আদালত আজ রায় ঘোষণা করেছেন। রায়ে আদালত জেল আপিল আংশিক মঞ্জুর করে আসামি রাসেল রাঢ়ীকে মৃত্যুদণ্ড থেকে সাজা পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন দিয়েছেন। একইসঙ্গে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন। মামলার আরেক আসামি রাসেলের বাবা আলাউদ্দিন রাঢ়ী কারাগারে মারা যাওয়ায় তার নাম আপিল শুনানি থেকে বাদ যায়।
এ মামলায় ২০১৬ সালে বরিশালের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সুদীপ্ত দাশ দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- আলাউদ্দিন রাঢ়ী ও রাসেল রাঢ়ী। তারা সম্পর্কে বাবা ও ছেলে।
দণ্ডপ্রাপ্ত আলাউদ্দিন রাঢ়ী নিহত সাংবাদিক মনির রাঢ়ীর চাচাতো ভাই। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আলাউদ্দিনের ছেলে সোহাগ রাঢ়ীকে খালাস দেন আদালত। দণ্ডপ্রাপ্তরা বরিশালের মুলাদী পৌর এলাকার বাসিন্দা।
মামলা থেকে জানা যায়, ২০১০ সালের ২১ ডিসেম্বর মুলাদী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা দলিল উদ্দিন ও আনোয়ার হোসেনের বাড়ির চলাচলের পথ বন্ধ করতে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করছিলেন আলাউদ্দিন রাঢ়ী ও তার ছেলেরা। এ সময় প্রতিবেশীরা চলাচলের পথ বন্ধ করার বিষয়টি সাংবাদিক মনির রাঢ়ীকে জানান। মনির প্রতিবেশীদের চলাচলের পথে প্রাচীর নির্মাণ না করতে আলাউদ্দিনকে অনুরোধ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আলাউদ্দিন ও তার সন্তানেরা মনিরের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন এবং একপর্যায়ে আলাউদ্দিনের নির্দেশে রাসেল মনিরের মাথায় কোদাল দিয়ে কোপ দেন। চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
মনিরের ভাই জসিম উদ্দিন মুলাদী থানায় আলাউদ্দিন, তার দুই ছেলে, স্ত্রী আলেয়া বেগম ও প্রতিবেশী মোতালেব রাঢ়ীকে অভিযুক্ত করে মামলা করেন।