সাবেক স্বামীর দেওয়া আগুনে প্রাণ গেল পোশাককর্মী সাথীর
অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মানলেন আগুনে ঝলসে যাওয়া পোশাককর্মী সাথী আক্তার (১৯)। রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে মৃত্যু হয় তাঁর। সাবেক স্বামীর দেওয়া আগুনে ঝলসে যাওয়ার পর ১২ দিন ধরে মৃত্যুযন্ত্রণা ভোগ করছিলেন তিনি।
সাথী আক্তার মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়নের কাটাখালী-ফেরাজীপাড়া এলাকার আব্দুস সাত্তারের মেয়ে। ধামরাই উপজেলার একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন তিনি।
জানা গেছে, গত ২৮ জানুয়ারি মধ্যরাতে প্রাক্তন স্বামী নাঈমের ছুড়ে দেওয়া পেট্রোল ও আগুনে ঝলসে যায় সাথীর হাত-মুখ।
নিহত সাথী আক্তারের মা জুলেখা বেগম বলছেন, মানিকগঞ্জ সদরের বেতিলা এলাকার নিজাম উদ্দিনের ছেলে নাঈমের সঙ্গে দুবছর আগে বিয়ে হয় সাথীর। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য সাথীকে নির্যাতন করে আসছিলেন নাঈম। বখাটে ও মাদকাসক্ত হওয়ার কারণে তাঁদের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটানো হয়। বিচ্ছেদের পর থেকেই রাস্তাঘাটে সাথীকে বিরক্ত করতে থাকেন নাঈম। এমনকি তাঁর সঙ্গে সংসার না করলে মেরে ফেলার হুমকিও দেন তিনি।
এর জের ধরে গত ২৮ জানুয়ারি মধ্যরাতে ঘরের ভাঙা জানালা দিয়ে সাথীর মুখে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে হাত-মুখ ঝলসে দেন নাঈম।
সাথীর বড় ভাই সোহেল হোসেন জানান, তাঁর বোন ধামরাই উপজেলার একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। কারখানায় যাওয়া-আসার সময় বিভিন্ন জায়গায় তাঁকে বিরক্ত করতেন নাঈম। এমনকি আবারও তাঁকে বিয়ে করে সংসার করার জন্য চাপ দিতেন তিনি। তাঁর এ প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় নাঈম আগুন দিয়ে সাথীর হাত ও মুখ ঝলসে দেন।
পরে সাথীকে উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউশনে নিয়ে যাওয়া হয়। বার্ন ইউনিটে ১২ দিন যন্ত্রণা ভোগ করে গতকাল বুধবার মৃত্যু হয় সাথীর। হাসপাতাল থেকে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে সাথীর মরদেহ মানিকগঞ্জে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানা গেছে।
এরই মধ্যে মানিকগঞ্জ র্যাব-৪, সিপিসি-৩-এর একটি অভিযানিক দল সাথীর সাবেক স্বামী নাঈমকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।