সিরাজগঞ্জে কৃষক হত্যা : আওয়ামী লীগনেতাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় আমিরুল ইসলাম (৫২) নামে এক কৃষককে লোহার রড ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আওয়ামী লীগনেতাসহ ১২ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে নিহত কৃষকের ছেলে নাঈম প্রামানিক বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
উল্লাপাড়া মডেল থানার তদন্ত কর্মকর্তা এনামুল হক মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন—উল্লাপাড়া উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি আব্দুল হাই, তাঁর স্ত্রী রনজিতা খাতুন ও ছেলে রাকিবুল ইসলাম, টুটুল প্রামানিক, গোলাম কিবরিয়া, রেজাউল করিম, ডাবলু প্রামানিক, আব্দুস সালাম, হাফিজ উদ্দিন, ফাজিলা খাতুন, বাকি প্রামানিক, রাফসান প্রামানিক।
নিহত আমিরুল ইসলাম উল্লাপাড়া উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের গোনাইগাঁতী গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে।
মামলার অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, নিহত আমিরুল ইসলামের সঙ্গে আসামিদের আগে থেকে বিরোধ ও শত্রুতা চলে আসছিল। ১ নম্বর আসামী আব্দুল হাই উল্লাপাড়া উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি। তিনি বিভিন্ন বিচার-শালিস করে গ্রামের আসহায় মানুষের থেকে টাকা গ্রহণ করে। এসব কথা বলতে গেলে তাদের হুমকী ও ভয়ভীতি দেখানো হয়। কয়েকদিন ধরে গ্রামে কিছু লোকজনের মধ্যে নলকুপের স্ক্রিম (পানির পাইপ) স্থাপন নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে শালিসী বৈঠক হয়। বৈঠকে স্ক্রিম মালিকদের কিছু টাকা আওয়ামী লীগনেতা আব্দুল হাইয়ের কাছে জমা রাখা হয়। কিন্তু এ টাকা তিনি স্ক্রিম মালিকদের আর ফেরত দেননি। বিষয়টি নিয়ে কৃষক আমিরুল ইসলামসহ এলাকার কিছু মানুষ প্রতিবাদ জানায়।
এতে ক্ষুব্ধ হন আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল হাই। তিনি আমিরুল ইসলামকে খুন করার পরিকল্পনা করেন। রোববার রাতে কৃষক আমিরুল ইসলাম গ্রামের একটি চায়ের দোকানের সামনে অবস্থান করছিলেন। এসময় আওয়ামী লীগনেতা আব্দুল হাইসহ আসামিরা তার ওপর হামলা চালায়। তাকে লোহার রড, হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। স্থানীয়রা আমিরুলকে উদ্ধার করে প্রথমে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে পাঠানো হয়। এখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার সকালে তার মৃত্যু হয়।