সীতাকুণ্ডে এখনও নেভেনি আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ২৯ ইউনিট
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বেসরকারি একটি কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর ১১ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। কনটেইনারে দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হচ্ছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
আগুন নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে ঘটনাস্থলে চট্টগ্রাম মহানগরীর সব ফায়ার সার্ভিস স্টেশন কাজ করছে। এ ছাড়া কুমিল্লা ও ফেনীসহ আশপাশের এলাকার ফায়ার সার্ভিসও যোগ দিয়েছে আগুন নিয়ন্ত্রণে। ঘটনাস্থলে বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসের ২৯টি ইউনিট কাজ করছে বলে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে আজ রোববার এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
সীতাকুণ্ডে গতকাল শনিবার রাতে বেসরকারি ওই কনটেইনার ডিপোতে আগুনের পর ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়। এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের দুই সদস্যসহ এখন পর্যন্ত ১৮ জনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। দগ্ধ ও আহত দেড় শতাধিক ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৪৩ জন এবং পুলিশের ১৩ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
শনিবার রাত ৯টার দিকে অগ্নিকাণ্ডের পর এ বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে ঘটনাস্থল থেকে অন্তত চার কিলোমিটার এলাকা। এ ছাড়া আশপাশের বাড়িঘরের জানালার কাঁচ ভেঙে পড়ে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিস্ফোরণে হতাহত ব্যক্তিদের মধ্যে ডিপোর শ্রমিকসহ পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যেরা রয়েছেন।
জানা গেছে, প্রতিদিনের মতো কর্মচঞ্চল এ কনটেইনার ডিপোটিতে হঠাৎ গতকাল শনিবার রাত ৯টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ে। কেমিক্যালের কয়েকটি কনটেইনারে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। মুহূর্তেই আশপাশের চার থেকে পাঁচ কিলোমিটার এলাকার অনেক বাসা-বাড়ির জানালার কাঁচও ভেঙে পড়ে এ বিকট শব্দে। এর মধ্যে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ায় হতাহত বাড়তে থাকে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। কিন্তু, ডিপোটিতে থাকা কিছু কনটেইনারে রাসায়নিক পদার্থ থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয় ফায়ার সার্ভিসসহ সংশ্লিষ্টদের।
এ ঘটনার পর আহত ব্যক্তিদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে, একসঙ্গে এত রোগীর চিকিৎসা দিতে হিমশিম অবস্থা চমেক হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের। পরে চট্টগ্রামের জেনারেল হাসপাতাল, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালসহ (সিএমএইচ) বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে আহত ব্যক্তিদের পাঠানোর উদ্যোগ নেয় প্রশাসন।
এদিকে, মানবিক কাজে সব স্বাস্থ্যকর্মী এগিয়ে এসেছেন বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. মো. ইলিয়াছ চৌধুরী। এ ছাড়া পরিস্থিতি মোকাবিলায় হাসপাতালসহ সব চিকিৎসককে প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য ও বিভাগীয় প্রশাসন।