সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন শুরু
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। আগামীকাল বুধবার বিকেল পর্যন্ত দুই দিনব্যাপী এ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলবে।
এবারের নির্বাচনে সরকার সমর্থক সাদা ও বিএনপিপন্থিদের নীল প্যানেলের পক্ষে জমজমাট প্রচারে মুখর ছিল সুপ্রিম কোর্ট চত্বর ও আইনজীবী সমিতি ভবন এলাকা। নির্বাচনে ১৪টি পদের বিপরীতে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল দিয়েছেন এ দুপক্ষের আইনজীবীরা।
এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সভাপতি পদে দুজন, সহসভাপতি ও সহসম্পাদক পদে জামায়াতপন্থি আইনজীবীদের দুজনসহ মোট ৩৩ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
তবে সরকারপন্থি আইনজীবীদের মধ্য থেকে সভাপতি পদে একজন বিদ্রোহী প্রার্থী হলেও কোনো প্যানেল দাখিল করেননি।
এদিকে, সম্পাদক পদে প্রার্থিতা ঘোষণা করেও সরে পড়েন আইনজীবী অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথী। অন্যদিকে, বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে প্রার্থী ঠিক করার পর কেউ বিদ্রোহী হননি। তবে তাদের মিত্র জামায়াত দুটি পদে বিদ্রোহী প্রার্থী ঘোষণা করে।
২০২২-২৩ সালের জন্য ১৪ সদস্যের কার্যকরী কমিটির নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী সরকার ও বিরোধী জোটের উভয় প্যানেল।
এ প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি একটি সেবামূলক সংগঠন। এ ছাড়া আইনজীবী সমিতির জন্য আধুনিক একটি ২০ তলা ভবন তৈরির পরিকল্পনা আছে। আমি সভাপতি হলে আইনজীবীদের সেবায় যা যা করণীয়, করব। সে কারণে সাধারণ আইনজীবীরা এবারের নির্বাচনে সমন্বয় পরিষদ সমর্থিত প্যানেলকে নির্বাচিত করে সমিতির হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
সভাপতি পদে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ব্যারিস্টার বদরোদ্দোজা বাদল বলেন, ‘দেশের সার্বিক পরিস্থিতি চিন্তা করে আইনজীবীরা আমাদের পূর্ণ প্যানেলকে বিজয়ী করবেন বলে প্রত্যাশা করছি। আমি সুপ্রিম কোর্ট বারের সব সদস্যদের কল্যাণে অতীতে ভূমিকা রেখে আসছি, বিজয়ী হলে আবারও ভূমিকা রাখার সুযোগ হবে।’
গত নির্বাচনে সভাপতিসহ আট পদে প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেল থেকে। আর সম্পাদকসহ ছয়টি পদে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত আইনজীবীরা জয় পান।
এবারের নির্বাচন নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (বার) সুপারিনটেনডেন্ট (তত্ত্বাবধায়ক) জানান, এবার মোট আট হাজার ৬২৩ জন আইনজীবী তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এ ওয়াই মশিহুজ্জামানকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের নির্বাচন পরিচালনা উপকমিটি গঠন করা হয়েছে। তাঁরা এরই মধ্যে নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। মোট ৫১টি বুথে ভোটগ্রহণ করা হবে।
আওয়ামী লীগ সমর্থিত (বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ) সাদা প্যানেলে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির। সহসভাপতি পদে মো. শহীদুল ইসলাম ও মোহাম্মদ হোসেন এবং সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মো. আবদুন নুর (দুলাল)।
কোষাধ্যক্ষ পদে মো. ইকবাল করিম, সহসম্পাদক পদে এ বি এম হামিদুল মিসবাহ ও মো. হারুন অর রশিদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সাত সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছেন—ফাতেমা বেগম, হাসান তারিক, মো. মনিরুজ্জামান রানা, মুনমুন নাহার, শফিক রায়হান শাওন, শাহাদাত হোসাইন (রাজিব) ও সুব্রত কুমার কুন্ডু।
বিএনপি সমর্থিত (জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম) নীল প্যানেলে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ব্যারিস্টার বদরোদ্দোজা বাদল। সহসভাপতি পদে মনির হোসেন ও মো. আসরারুল হক, সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মো. রুহুল কুদ্দুস (কাজল)।
এ ছাড়া কোষাধ্যক্ষ পদে মোহাম্মদ কামাল হোসেন, সহসম্পাদক পদে মাহফুজ বিন ইউসুফ ও মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সাতটি সদস্য পদের জন্য প্রার্থী হয়েছেন ফাতিমা আক্তার, কামরুল ইসলাম, মাহদীন চৌধুরী, মো. আনোয়ারুল ইসলাম, মো. গোলাম আক্তার জাকির, মো. মঞ্জুরুল আলম (সুজন) ও মো. মোস্তফা কামাল বাচ্চু।
প্যানেলের বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর ও ইউনুছ আলী আকন্দ।
অন্যদিকে জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীরা হলেন সহসভাপতি পদে মঈন উদ্দিন ফারুকী ও সহসম্পাদক পদে আব্দুল করিম। অপর একজন সহসম্পাদক প্রার্থী হলেন অ্যাডভোকেট ফরহাদ উদ্দিন ভূঁইয়া।