‘স্যার ও ম্যাডাম’ বলা নিয়ে যা আছে ১৯৯০ সালের প্রজ্ঞাপনে
জনপ্রশাসন বা সরকারি কর্মকর্তাদের ‘স্যার বা ম্যাডাম’ নামে সম্বোধনের রেওয়াজ বা রীতি যুগযুগ ধরে চলে এলেও ১৯৯০ সালে তা রদ করা হয়। ওই বছর ১১ ডিসেম্বর সেই সময়ের সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে। ওই মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব মো. ফজলুল হকের স্বাক্ষরে জারি করা প্রজ্ঞাপনে সরকারি অফিস বা প্রতিষ্ঠানে সম্বোধনের জন্য ‘স্যার’-এর পরিবর্তে ‘জনাব’ ব্যবহারের সুপারিশ করা হয়। প্রজ্ঞাপনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ‘সরকারি অফিসার বা কর্মকর্তাদের নামে প্রেরিত পত্রাদির শুরুতে পুরুষে ক্ষেত্রে ‘মহোদয়’ ও মহিলাদের ক্ষেত্রে ‘মহোদয়া’ লেখা যাইতে পারে।”
উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে সেবা নিতে গিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের ‘স্যার’ বলে সম্বোধন না করার ফলে অনেক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। সম্প্রতি ‘স্যার না বলায়’ রংপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ক্ষুব্ধ আচরণ করেছেন—এমন অভিযোগ তুলেছিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ওমর ফারুক। এ ঘটনার প্রতিবাদে তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচিও পালন করেন। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সরকারি চাকরিজীবীদের ‘স্যার’ ডাকা না–ডাকা নিয়ে চলে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সচিবালয়ে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত এক সংলাপে বলেছিলেন, ‘সরকারি সেবা নিতে আসা জনসাধারণকে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ‘স্যার’ বা ‘ম্যাডাম’ বলে সম্বোধনের কোনো নীতি নেই। সরকারি কর্মচারীরা জনগণের সেবক। তাঁদের স্যার বা ম্যাডাম ডাকার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। ভদ্রতার খাতিরে অনেকে স্যার বা ম্যাডাম ডাকেন, কিন্তু এটি ডাকা বাধ্যতামূলক কিছু নয়। কেউ যদি আপা বা ভাই ডাকেন, তাতে দোষের কিছু নেই। এতে মাইন্ড করারও কিছুই নেই। সরকারি চাকরিজীবীরা জনগণের সেবক—এই চিন্তা থেকেই কাজ করতে হবে।’
এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদের কথা মনে করিয়ে দেন। যেখানে বলা হয়েছে, ‘প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ; এবং জনগণের পক্ষে সেই ক্ষমতার প্রয়োগ কেবল এই সংবিধানের অধীন ও কর্তৃত্বে কার্যকর হবে।’

নিজস্ব প্রতিবেদক