হেফাজত নেতা মামুনুল হক গ্রেপ্তার
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে তাঁকে আজ রোববার দুপুর ১টার দিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম।
মাহবুব আলম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডব এবং ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরের ঘটনার মামলায় আসামি মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
গত ৪ এপ্রিল সোনারগাঁওয়ে রয়েল রিসোর্টে হেফাজতের যুগ্ন মহাসচিব মামুনুল হক এক নারীসহ অবরুদ্ধ হন। এ ঘটনায় তাঁর সমর্থকেরা রয়েল রিসোর্টে হামলা, আওয়ামী লীগ অফিস ও ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও মহাসড়কে অগ্নিসংযোগসহ সহিংসতা চালায়। পুলিশ বাদী হয়ে দুটি এবং ক্ষতিগ্রস্তরা বাদী হয়ে পাঁচটি মামলা করে। এসব মামলায় ৪৪৬ জনের নাম উল্লেখ করে মোট ১৮০০ জনকে আসামি করা হয়। এ পর্যন্ত এই সাত মামলায় পুলিশ ৬৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
গত মাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে ‘গেস্ট অব অনার’ হিসেবে যোগ দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু, মোদির সফরের বিরোধিতা করে হেফাজতে ইসলামসহ বেশকিছু রাজনৈতিক দল ও সংগঠন।
এই প্রতিবাদের জের ধরে ঢাকায় ব্যাপকভাবে সহিংসতার ঘটনা ঘটে। চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে বিক্ষোভের সময় চারজন নিহতের ঘটনাও ঘটে। এরপর দুদিন ধরে সহিংসতা হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নারায়ণগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়াতেও একাধিক প্রাণহানীর ঘটনাও ঘটে। হামলা ও ভাঙচুর করা হয় সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে।
এসব ঘটনায় দেশের বিভিন্ন স্থানে মামলা হয়েছে; যাতে হেফাজতে ইসলামের নেতাদের নামও রয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাত হাজার হাজার মানুষকে এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন হেফাজতে ইসলামের নেতাকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ২০১৩ সালের ৫ মে ঢাকার মতিঝিলে তাণ্ডবের ঘটনায়ও অনেক হেফাজতে ইসলামের নেতার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। সেসব মামলায়ও গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে নেতাদের।
বিভিন্ন সময়ে যাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাঁদের মধ্যে রয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমির মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, হেফাজতে ইসলামের সহকারী মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমেদ, হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল ইসলাম ইসলামাবাদী, হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগরীর সভাপতি আল্লামা জুনায়েদ আল হাবীব, হেফাজতে ইসলামের সহকারী মহাসচিব ও লালবাগ মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা শাখাওয়াত হোসাইন রাজী, ঢাকা মহানগরের নায়েবে আমির মোহাম্মদ যোবায়ের, মাদানীনগর মাদরাসার মুহাদ্দিস মুফতি বশির উল্লাহ প্রমুখ গ্রেপ্তার হন।