ধর্ষকদের খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ, বাদীকে হুমকির অভিযোগ
সুনামগঞ্জে স্বামীকে বেঁধে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলা তুলে নিতে বাদীর পরিবারকে আসামিরা হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত ৩ জুন রাতে জগন্নাথপুর পৌর শহরের সানলাইট আবাসিক হোটেলে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ ওই হোটেলের রাকিব আলীকে গ্রেপ্তার করলেও মামলার অন্য আসামিদের এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ ও ওই নারীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ওই দম্পতি গত বুধবার সন্ধ্যায় সিলেট থেকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। রাত ৯টার দিকে জগন্নাথপুর পৌর শহরে যান তাঁরা। এ সময় দিরাই যাওয়ার কোনো বাস না পেয়ে রাতে সানলাইট হোটেলের একটি কক্ষে ওঠেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, রাত ১১টার দিকে হোটেলের ওই কক্ষের দরজায় কড়া নাড়লে বাদী দরজা খুলে দেন। তখন জগন্নাথপুর পৌর এলাকার ইকড়ছই গ্রামের শেলন মিয়াসহ চার-পাঁচজন যুবক ওই কক্ষে ঢুকে পড়েন।ওই যুবকরা বাদীকে বেঁধে ফেলেন। পরে তাঁর সামনেই স্ত্রীকে ধর্ষণ করেন শেলন মিয়া। এরপর তাঁর স্ত্রী গণধর্ষণ থেকে বাঁচতে হোটেলের ছাদ থেকে ঝাঁপ দেন। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে যুবকরা গুরুতর আহত অবস্থায় ওই নারীকে গভীর রাতে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এ সময় তাঁকে বলা হয়, হাসপাতালের চিকিৎসকসহ কাউকে ঘটনা না বলতে। বললে তাঁকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। এরপর প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে জগন্নাথপুর শহরের এক বাড়িতে নিয়ে রাখা হয় তাঁকে। পরের দিন তিনি আবার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে চিকিৎসা নেন এবং বিষয়টি পুলিশকে জানান।
পরে ওই নারীর স্বামী জগন্নাথপুর থানায় পৌর এলাকার ইকড়ছই গ্রামের শেলন মিয়া (২৯), হোটেলের ব্যবস্থাপক রাকিব আলীসহ (৩৫) চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পুলিশ রাকিব আলীকে গ্রেপ্তার করেছে। ওই নারী এরপর থেকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার তিনি বাড়ি গেছেন।
ওই নারী বলেন, ঘটনার সময়ই আসামিরা তাঁকে বলেছিল, মামলা করলে মেরে ফেলবে। এখনো নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে তারা। তিনি এই ঘটনার বিচার চান।
ওই নারীর স্বামী অভিযোগ করেন, ঘটনার পর থেকে আসামিরা মামলা তুলে নিতে নানাভাবে তাঁকে হুমকি দিচ্ছে। সুনামগঞ্জ হাসপাতালে এসেও মামলা তুলে নিতে বলেছে। এ জন্য তাঁদের নানা প্রলোভনও দেখানো হয়।
জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান বলেন, ‘হুমকির বিষয়টি আমাকে কেউ জানায়নি। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। কাউকে ছাড়া হবে না। কেউ এ ঘটনা আপসের চেষ্টা করলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে।’