মারা গেলেন গাবতলীতে গুলিবিদ্ধ শ্রমিক
ধর্মঘট চলাকালে রাজধানীর গাবতলীতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ পরিবহন শ্রমিক মারা গেছেন।
আজ বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শ্রমিককে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।
পুলিশ জানায়, বেল সোয়া ১১টার দিকে দারুস সালাম থানা পুলিশ গুলিবিদ্ধ শ্রমিককে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যায়। ভর্তির সময় তাঁকে অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
সন্ধ্যায় জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. জেসমিন নাহার বলেন, ‘মৃত ব্যক্তির বুকে-পেটে অসংখ্য গুলির চিহ্ন ছিল। এতেই তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁকে আমরা অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে পেয়েছি। এখনো তাঁর স্বজনরা না থাকায় নাম-ঠিকানা জানা যায়নি।’ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তাঁর চিকিৎসা চলছিল।
এদিকে, অসমর্থিত সূত্রে জানা গেছে, মৃত ব্যক্তির নাম শাহ আলম। তিনি বৈশাখী পরিবহনে কর্মরত ছিলেন।
ঢাকা মেডিকেলের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) বাচ্চু মিয়া জানান, মরদেহ জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। আগামীকাল ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হবে। তিনিও শ্রমিকের পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেননি।
ধর্মঘট চলাকালে গাবতলীতে গতকাল মঙ্গলবার ও আজ বুধবার দফায় দফায় শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গতকাল একটি টেলিভিশন চ্যানেলের গাড়ি ছাড়াও কিছু যানবাহন ভাঙচুর করা হয়। শ্রমিকরা একটি পুলিশ বক্স ও রেকারেও আগুন দেয়। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট মারে। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে পুলিশও টিয়ার শেল নিক্ষেপ ও শ্রমিকদের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় শাহ আলম নামে এক শ্রমিক গুরুতর আহত হন বলে জানা যায়।
সড়ক দুর্ঘটনায় চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ, এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহত হওয়ার মামলায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স পরিবহনের বাসচালক জামির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে প্রথমে চুয়াডাঙ্গা ও পরে যশোর বিভাগে ধর্মঘট শুরু করেন শ্রমিকরা।
এ ধর্মঘট চলাকালেই সাভারের ট্রাকচালক মীর হোসেন মিরুকে একটি হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। তারপর কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়াই গতকাল সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেন পরিবহন শ্রমিকরা। ২০০৪ সালে খোদেজা বেগম নামের এক নারীকে ট্রাক চাপা দিয়ে চালকের বিরুদ্ধে হত্যার প্রমাণ পান ঢাকার আদালত।