গাবতলীতে সংঘর্ষ, তিন মামলায় আসামি এক হাজার শ্রমিক
রাজধানীর গাবতলীতে পরিবহন শ্রমিকদের সংঘর্ষ, ভাঙচুরের ঘটনায় তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় এক হাজারেরও বেশি শ্রমিককে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় ৪৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার রাতে দারুস সালাম থানায় এসব মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা এবং একজন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি অন্য মামলাটি করেন।
গত মঙ্গলবার ও গতকাল বুধবার বিভিন্ন সময়ে দফায় দফায় শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সময় সারা দেশে পরিবহন ধর্মঘট পালন করছিলেন শ্রমিকরা।
পুলিশের দায়ের করা একটি মামলায় ৪৬ জন আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ওই মামলায় আরো এক হাজার অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। মামলার প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে বলা হয়েছে, ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন লঙ্ঘন ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডসহ অন্তর্ঘাতমূলক ক্ষতিসাধন করা হয়েছে। ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। ওই মামলায় বাদী হয়েছেন পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. যোবায়ের। একই থানায় করা অন্য মামলার বাদী হয়েছেন এসআই মো. নিয়াজ।
ফেরদৌসী নামে এক নারী বাদী হয়ে দারুস সালাম থানায় অন্য মামলাটি দায়ের করেন। ওই মামলায় অজ্ঞাতনামা এক হাজার জনকে আসামি করা হয়। হত্যার উদ্দেশ্যে ভীতি প্রদান, হুমকি দেওয়া ও মারধর করার অপরাধে তিনি ওই মামলা দায়ের করেন বলে প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে বলা হয়।
এ ব্যাপারে দারুস সালাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিমুজ্জামান জানান, গাবতলীতে দুদিন পরিবহন শ্রমিকরা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটিয়েছে। এ কারণে থানায় তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশ বাদী হয়ে করেছে দুটি। এখানে একাধিক পরিবহন শ্রমিকের নাম উল্লেখ করে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
এর আগে গতকাল বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘তারা (শ্রমিকরা) পুলিশের রেকার ভেঙে ফেলেছে, বক্স ভেঙে ফেলেছে। আজকে একটা জিপের ওপর আক্রমণ করতে গিয়েছিল, এ সময় একজন শ্রমিক আহত হয়েছেন। এটা আপনারা দেখেছেন। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী চরম ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে। আমরা শেষ পর্যন্ত দেখব, তারপর যা করার করব।’
সড়ক দুর্ঘটনায় চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ, এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহত হওয়ার মামলায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স পরিবহনের বাসচালক জামির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে প্রথমে চুয়াডাঙ্গা ও পরে যশোর বিভাগে ধর্মঘট শুরু করেন শ্রমিকরা।
এ ধর্মঘট চলাকালেই সাভারের ট্রাকচালক মীর হোসেন মিরুকে একটি হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। তারপর কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়াই গতকাল মঙ্গলবার থেকে সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেন পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা।
ধর্মঘট চলাকালে গত মঙ্গলবার ও গতকাল বুধবার বিভিন্ন সময়ে দফায় দফায় শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গতকাল একটি টেলিভিশন চ্যানেলের গাড়ি ছাড়াও কিছু যানবাহন ভাঙচুর করা হয়। রাতে শ্রমিকরা একটি পুলিশ বক্স ও রেকারে আগুন দেন।