জাতিসংঘের উদ্বেগ, তারানকোকে দায়িত্ব
জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকোকে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার জাতিসংঘের সদর দপ্তরে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফান ডুজারিক। তিনি বলেন, মহাসচিবের দেওয়া দায়িত্ব অনুযায়ী তারানকো কাজ করছেন।
বাংলাদেশের বর্তমান অস্থিরতা প্রসঙ্গে ডুজারিক বলেন, ‘আমরা এ কথা বহুবার বলেছি যে, গত বছর থেকে বাংলাদেশে চলা সহিংসতা ও জীবননাশের ঘটনায় আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।’
এর আগে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্রের কাছে মুশফিকুল ফজল নামের একজন প্রশ্ন করেন, বাংলাদেশে একটি অস্থির পরিস্থিতি বিরাজমান। সাধারণ মানুষ ভীষণ কষ্টে দিন কাটাচ্ছে, যানবাহনে আগুন দেওয়া হচ্ছে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সীমা ছাড়িয়ে গেছে, গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকারের জন্য জনগণ আন্দোলন করছে। আমি জানতে চাইছি, এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে জাতিসংঘ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে কি না? কারণ, গত বছর ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের আগে অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো বাংলাদেশ সফরে গিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো সমাধান ছাড়াই তিনি ফিরে যান। এর পর বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘ শুধু উদ্বেগই প্রকাশ করেছে। আপনি (স্টিফান ডুজারিক) কি মনে করেন, বাংলাদেশে একটি বিশ্বাসযোগ্য-স্বচ্ছ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করার জন্য জাতিসংঘের শুধু উদ্বেগ প্রকাশ করাই যথেষ্ট? নাকি বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের আরো বেশি কিছু করা উচিত?
জবাবে ডুজারিক বলেন, ‘অবশ্যই। আপনি যথার্থই বলেছেন। সহকারী মহাসচিব অস্কার ফারনান্দেজ তারানকোকে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের দায়িত্ব দিয়েছেন মহাসচিব। তিনি সেই কাজই করছেন। বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা ও ইতবাচক উন্নয়নের ব্যাপারে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন ব্যক্তিগতভাবে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আর আপনারা তো জানেন, অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।’
পরে আরেক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ‘আপনি বললেন যে বাংলাদেশ ও পশ্চিম সাহারার পরিস্থিতি আপনারা পর্যবেক্ষণ করছেন। আপনি বলেছেন, তারানকো এখনো বিষয়টির সঙ্গে যুক্ত। আমি জানতে পেরেছি, আজ (বুধবার) বিকেলে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়ালের সঙ্গে তার (তারানকো) বৈঠক রয়েছে। যদি আমি ধরে নিই যে বৈঠকটি এই বিষয় (বাংলাদেশ ও পশ্চিম সাহারা) নিয়ে, তাহলে কি ভুল হবে? এবং আপনি এই বৈঠককে কীভাবে দেখছেন?’
জবাবে জাতিসংঘের মহাসচিবের মুখপাত্র বলেন, ‘আমার মনে হয়, কোনো কিছু অনুমান করা ঠিক হবে না। অনুমানের বিপরীতে আমি আপনাকে কিছু প্রকৃত তথ্য দিতে পারি কি না, তা আমি দেখব।’