সিরাজগঞ্জে দুই দিনে ২১ অ্যানথ্রাক্স রোগী শনাক্ত
অসুস্থ গরুর মাংস খেয়ে গত দুদিনে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার কালিয়াকৈড় ও মোহনপুর গ্রামের ২১ জন অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে চারটি শিশু রয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একটি চিকিৎসক দল দুই গ্রামের আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসা করছেন।
এদিকে কালিয়াকৈড় ও মোহনপুর গ্রামের কৃষকদের গরুগুলোকে অ্যানথ্রাক্স রোগ প্রতিরোধে ইনজেকশন দেওয়া এবং এ বিষয়ে স্থানীয়দের সচেতন করতে পুরো এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে।
গতকাল মঙ্গলবার কালিয়াকৈড় ও মোহনপুর গ্রামে ১৫ জন অ্যানথ্রাক্স রোগী শনাক্ত করা হয়। এরপর আজ বুধবার আরো ছয়জন এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
আক্রান্তরা হলেন মোহনপুর গ্রামের রোকেয়া বেগম (৪৫), কামরুল ইসলাম (১৪), কালিয়াকৈড় গ্রামের শাহ আলম (৪০), আকরাম হোসেন (৩০), সেরাজুল ইসলাম আরিফ (৩৫), মাসুদ রানা (২৭), আব্দুস সামাদ (৫০), লিমা খাতুন (৩), ফাতিমা বেগম (৭০), রাশিদা খাতুন (৩১), আব্দুল হান্নান (৪০), জাহানারা খাতুন (৩০), বাদশা মিয়া (১৪), সেতু (১০), সিয়াম (১০), আমনত আলী (৪০), বুলবুলি খাতুন (২৫), লিপি খাতুন (৩০), রাবেয়া (৫), হাবিব (৩) ও আব্দুল মান্নান (৫০)।
স্থানীয়রা জানান, গত মাসে মোহনপুর গ্রামের রোকেয়া বেগম (৪৫) ও কামরুল ইসলাম (১৪) পাবনার ফরিদপুর উপজেলায় বেড়াতে যান। সেখান থেকে ফেরেন ২৫ মে। ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে তারা যে গরুর মাংস খেয়েছিলেন সেটি অসুস্থ ছিল। কারণ এর এক সপ্তাহ পর তাঁরা অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত হন। পরে গত ২৯ মে কালিয়াকৈড় গ্রামের সেরাজুল ইসলাম আরিফ তাঁর একটি অসুস্থ ষাঁড় জবাই করে কমমূল্যে গ্রামের লোকজনের মধ্যে বিক্রি করেন। এই মাংস জবাই, কাটা, বণ্টন ও যাঁরা খেয়েছেন তাঁদের সবার পরিবারের লোকজনই পর্যায়ক্রমে অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত লোকজনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাল একধরনের ফোস্কা ও ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে জ্বর ও ব্যথা।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাফরুল ইসলাম জানান, তিনি একটি চিকিৎসকদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাঁরা দুদিনে মোহনপুর ও কালিয়াকৈড় গ্রামে মোট ২১ ব্যক্তিকে অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করেছেন। এঁদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
যাঁরা অসুস্থ গরুর মাংস খেয়েছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত হতে পারেন বলেও জানান এই চিকিৎসক। ফলে কালিয়াকৈড় গ্রামে অ্যানথ্রাক্স রোগীর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন খান জানান, অসুস্থ গরুর মালিক সেরাজুল ইসলামকে গতকাল বিকেলে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দীপ কুমার সরকার।

এ বি এম ফজলুর রহমান, পাবনা