রাতে স্ত্রীর সঙ্গে শেষ কথা, সকালে দেশের জন্য জীবন
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2017/06/15/photo-1497533721.jpg)
চার মাস আগে ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে আসেন সেনাবাহিনীর করপোরাল মোহাম্মদ আজিজুল হক। এবার ঈদ করার কথা ছিল পরিবারের সঙ্গে। স্বজনরা ছিলেন অপেক্ষায়। অপেক্ষার পরই আসার কথা আনন্দ। এসেছে শোক। আজিজুলের বাড়িতে এখন মাতম।
গত মঙ্গলবার সকালে রাঙামাটি শহরের মানিকছড়িতে পাহাড়ধসের পর উদ্ধারকাজ চালাতে গিয়ে নিহত হন করপোরাল আজিজুল হকসহ (৪১) পাঁচ সেনাসদস্য। তিনি ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।
করপোরাল আজিজুল হক ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মগটুলা ইউনিয়নের তরফপাসাইল গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর বাবার নাম আমির উদ্দিন মুন্সী। তিনি এখন বেঁচে নেই। আজিজুল ছয় ভাইবোনের মধ্যে তৃতীয়।
মগটুলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বদরুজ্জামান মামুন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘খুবই অমায়িক ছিলেন আজিজুল। তাঁর মৃত্যুতে আমরা শোকে স্তব্ধ।’
গতকাল বুধবার ইফতারের কিছুক্ষণ আগে আজিজুলের লাশ পৌঁছায় গ্রামের বাড়িতে। আজ বৃহস্পতিবার দাফন অনুষ্ঠিত হয়।
বুধবার দিনভর আজিজুলের বাড়িতে ছিল মানুষের ভিড়। বাড়ির ভেতরে কান্নার আওয়াজ।
আহাজারি করছেন আজিজুলের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম। কাঁদছে আজিজুলের ছেলে শাকিল আহমেদ (১০) ও মেয়ে শাহনাজ আজিজ রিতা (১৩)।
আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘গত সোমবার রাতে আমার সঙ্গে মোবাইল ফোনে তাঁর শেষ কথা হয়। ২২ জুন ঈদের ছুটিতে বাড়ি এসে ছেলেমেয়েদের নিয়ে ঈশ্বরগঞ্জ পৌরশহরে গিয়ে পরিবার ও স্বজনদের জন্য কেনাকাটা করার কথা ছিল। সেই আশা পূরণ হলো না।’ কেননা পরদিন মঙ্গলবার সকালে রাঙামাটিতে পাহাড়ধসের পর উদ্ধারকাজ চালাতে গিয়ে আজিজুল হক নিহত হন।
আজিজুলের বড় ভাই আবদুল হাশিম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘১৯৯৫ সালে আজিজুল সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। আগামী বছরের এপ্রিলে অবসরে যাওয়ার কথা ছিল তার। চার মাস আগে একবার বাড়ি এসেছিল সে।’
হাশিম বলেন, ‘অবসরের পেনশনের টাকা দিয়ে ব্যবসা করার ইচ্ছে ছিল আমার ভাইয়ের। তার স্বপ্ন পূরণ হওয়ার আগেই আমাদের ছেড়ে চলে গেলে। ঈদও করা হলো না আমাদের সঙ্গে।’ আজিজুলের স্ত্রী আনোয়ারা বেগমকে যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
হাশিম বলেন, ‘আনোয়ারা বেগম শিক্ষিত নারী। তাকে যেন সরকার যোগ্যতা অনুযায়ী একটি চাকরি দেয়।’