ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চে ফেলানীর বাবার আবেদন
ফেলানী হত্যাকাণ্ডের সঠিক বিচারের ব্যবস্থা নিতে ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চের (মাসুম) কাছে আবেদন করেছেন তার বাবা নুরুল ইসলাম। মেয়ে হত্যার ন্যায়বিচারের কার্যকর উদ্যোগ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংস্থাটির প্রতি অনুরোধ করেছেন তিনি।
ভারতের কোচবিহারে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) বিশেষ আদালতে ফেলানী হত্যা মামলার পুনর্বিচারের রায়ে বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে নির্দোষ ঘোষণা করা হয়। এই রায়ে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ফেলানীর মা-বাবা।
ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম জানান,দুই দফা সাক্ষ্য দেওয়ার পরও মেয়ের হত্যার ন্যায্যবিচার তিনি পাননি। তাই এই রায় তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাঁর মতে, অমিয় ঘোষের ফাঁসি হওয়া উচিত ছিল। তা না করে ভারতের বিএসএফ বিচারের নামে তামাশা করেছে। তাই ভারত সরকারের কাছে সঠিক বিচার পাওয়ার আশায় মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চের কাছে আবেদনের সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চের আবেদনপত্রে নুরুল ইসলাম বলেন, ‘২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি আমার কন্যা ফেলানী খাতুন বাংলাদেশ ভারত সীমান্তের আন্তর্জাতিক সীমানা পিলার নং ৯৪৭-এর কাছে বিএসএফ সদস্যদের গুলিতে নির্মমভাবে নিহত হয়। এ ঘটনার পর বিএসএফ তার আদালতে বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে অভিযুক্ত করে একটি অভিযোগ গঠন করে। দুই বছর আট মাস পর ২০১৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত অমিয় ঘোষকে নির্দোষ বলে রায় দেন বিএসএফের আদালত। সেই রায় যথার্থ মনে করেননি বিএসএফ মহাপরিচালক। তিনি রায় পুনর্বিবেচনার আদেশ দিয়েছিলেন। এরপর গত ২ জুলাই ২০১৫ বিএসএফ কোর্ট অভিযুক্ত অমিয় ঘোষকে নির্দোষ বলে পুনরায় রায় দেন।’
নুরুল ইসলাম বলেন,‘বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষ ফেলানীকে গুলি করে হত্যা করার কথা আদালতে স্বীকার করার পরও তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় আমি বিস্মিত ও মর্মাহত। আমার কন্যার হত্যাকাণ্ডে বিএসএফ সদস্য যেহেতু সরাসরি জড়িত সে কারণে এর দায় ভারত সরকার তথা ভারতীয় জনগণের।’
ফেলানীর বাবা ভারত সরকারের কাছে তাঁর মেয়ের হত্যাকাণ্ডে জড়িত অমিয় ঘোষের শাস্তি এবং ক্ষতিপূরণের দাবি জানান।
ভারতীয় মানবাধিকার সংস্থা উচ্চ আদালতে মামলাসহ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবে বলে ওই আবেদনে আশা প্রকাশ করা হয়।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ আইন সালিশ কেন্দ্রের (আসক) সিনিয়র উপপরিচালক টিপু সুলতান জানান,ফেলানীল বাবা নুরুল ইসলাম আসকের মাধ্যমে ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চের নির্বাহী পরিচালক কিরিট রায়ের কাছে ভারতের উচ্চ আদালতে কন্যা হত্যার বিচার চেয়ে একটি আবেদন করেছেন। আসক সার্বক্ষণিকভাবে তাঁকে সহায়তা করবে বলেও জানান তিনি।
আসকের আইনজীবী অবন্তী নূর বলেন,‘আমরা ফেলানী হত্যা মামলার বেশির ভাগ কাগজ জোগাড় করে ফেলেছি। আইনি সহায়তার জন্য ভারতীয় দূতাবাস এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করছি। ফেলানী হত্যা মামলার ন্যায় বিচারের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করব।’