চান্দিনায় যৌতুকের বলি এক নববধূ
কুমিল্লার চান্দিনায় বিয়ের তিন মাসের মধ্যেই যৌতুকের বলি হলো নববধূ আয়েশা আক্তার (২০)। যৌতুকের দাবিতে স্বামীর অমানুষিক নির্যাতনে এই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি হত্যা না আত্মহত্যা, এ নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার সকালে উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের শালিখা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আয়েশা আক্তার ওই গ্রামের আবদুল কাইয়ুমের স্ত্রী এবং চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার অতিশ্বর গ্রামের মৃত আবু তাহেরের মেয়ে। তিনি নারায়ণগঞ্জের তোলারাম সরকারি কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।
আয়েশার ভাই জামাল হোসেন জানান, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে শালিখা গ্রামের আবদুল মান্নান ভূঁইয়ার ছেলে কাইয়ুমের সঙ্গে বিয়ে হয় আয়েশা আক্তারের। বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন অজুহাতে যৌতুক দাবি করে আসছিল স্বামী কাইয়ুম। আসন্ন ঈদ উপলক্ষে কাইয়ুম আবারো যৌতুক দাবি করায় আয়েশার পরিবার তাকে ঈদ উপলক্ষে নতুন পোশাক উপহার দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে কাইয়ুম। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার গভীর রাতে আয়েশাকে মারধর করে কাইয়ুম। একপর্যায়ে আয়েশার মৃত্যু হলে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে এবং ঘরে তালা দিয়ে পরিবারের সবাই পালিয়ে যায়।
নিহতের বোন ফাতেমা আক্তার বলেন, “দুই ভাই ও চার বোনের মধ্যে আয়েশা সবার ছোট। মঙ্গলবার রাতেও স্বামী কাইয়ুম তাকে মারধর করার পর আয়েশা মোবাইল ফোনে আমাকে বলেছিল, ‘বোন, আমাকে বাঁচান, আমাকে তারা বাঁচতে দেবে না। আমি বাঁচতে চাই।’ রাত ১টার দিকে ওই কথাই ছিল তার সঙ্গে শেষ কথা। তার পর থেকে আর তাকে ফোনে না পেয়ে সকালে আমরা শালিখা গ্রামে তার বাড়িতে এসে দেখি, বাড়িতে কেউ নেই। আমার বোনকে হত্যা করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে তারা সবাই পালিয়েছে।”
এদিকে রাত ১০টায় ফাতেমা আক্তার আরো বলেন, ‘আমরা হত্যা মামলা করতে চাইলে চান্দিনা থানায় মামলা নেয়নি।’
এ ব্যাপারে চান্দিনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রসুল আহমেদ নিজামীর সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, লাশের শরীরে হত্যার আলামত পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে হত্যার আলামত পাওয়া গেলে হত্যা মামলা নেওয়া হবে।