গুলশানের জঙ্গিরা গ্রেনেডের প্রশিক্ষণ নেয় বুড়িগঙ্গার পাড়ে
রাজধানীর গুলশানের স্প্যানিশ রেস্তোরাঁ হলি আর্টিজানে হামলায় অংশগ্রহণকারী জঙ্গিদের গ্রেনেড ছুড়ে মারার প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন মোহাম্মদ আসলাম হোসেন ওরফে র্যাশ। তাঁরা ঢাকার অদূরে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরবর্তী কোনো একটি জায়গায় এ প্রশিক্ষণ নেন।
আর প্রশিক্ষণের একপর্যায়ে গ্রেনেডের স্প্লিন্টারে আহত হন ‘জঙ্গি’ রোহান ইমতিয়াজ। তিনি পরবর্তী সময়ে হলি আর্টিজান হামলায় অংশ নেন এবং নিহত হন।
আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।
গতকাল শুক্রবার ভোরে মোহাম্মদ আসলাম হোসেন ওরফে র্যাশকে নাটোরের সিংড়া উপজেলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারপর আজকের সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, আসলাম হলি আর্টিজান হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী ও অস্ত্র সরবরাহকারী।
মনিরুল ইসলাম আরো জানান, সিটিটিসি, পুলিশ সদর দপ্তরের ল’ফুল ইন্টারসেকশন সেল (এলআইসি শাখা) বগুড়া ও নাটোর জেলা পুলিশের সহায়তায় র্যাশ ওরফে আবু জাররাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাশেদ ওরফে র্যাশ জানান, ওই হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ও মূল সমন্বয়কারী তামিম চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন তিনি। এই হামলায় অস্ত্র সরবরাহ এবং হামলায় অংশগ্রহণকারীদের প্রশিক্ষণ দেন তিনি।’
সংবাদ সম্মেলনে মনিরুল ইসলাম আরো বলেন, ‘হলি আর্টিজানে হামলার আগে কীভাবে গ্রেনেড ছুঁড়তে হয় তা শেখাতে কয়েকজন জঙ্গিকে বুড়িগঙ্গার পাড়ে নিয়ে গিয়ে প্রশিক্ষণ দেন আসলাম। প্রশিক্ষণের সময় রোহান ইমতিয়াজ নামের এক জঙ্গি স্প্লিন্টারের আঘাতে আহত হয়। এ ছাড়া আসলাম এই হামলার ঘটনাস্থল রেকি করা, হামলার জন্য বসুন্ধরা এলাকায় বাসা ভাড়া করাসহ অন্যান্য কাজেও সহযোগিতা করে।’
হলি আর্টিজান হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া কয়েকজন, নিহত তানভীর কাদরির ছেলে তাহরীম কাদেরির দেওয়া তথ্য এবং গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আসলামকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান মনিরুল।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসলাম ওরফে র্যাশ গুলশান হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলে দাবি করেন মনিরুল ইসলাম। তিনি হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলার পরবর্তী সময়ে নব্য জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) বিস্তারেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
আজ র্যাশকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে বলে জানান মনিরুল।