রাজন হত্যা মামলার আসামি ময়না গ্রেপ্তার
সিলেটে শিশু শেখ সামিউল আলম রাজন (১৩) হত্যা মামলার আসামি স্থানীয় চৌকিদার ময়না মিয়া লালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে সিলেট শহরতলির টুকেরবাজার এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে জালালাবাদ থানা পুলিশ।
এ ছাড়া রাজন হত্যাকাণ্ডে উৎসাহ দেওয়ার অভিযোগে দুই প্রত্যক্ষদর্শী আজমত উল্লাহ (৫৫) ও ফিরোজ আলীকে (৬০) হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
ময়নাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. রহমত উল্লাহ।
মো. রহমত উল্লাহ জানান, রাজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সিলেট শহরতলির কুমারগাঁও এলাকার আজমত উল্লাহ ও ফিরোজ আলীকে গতকাল সোমবার রাতে আটক করে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার বিকেলে তাঁরা সিলেটের মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট-১ এর বিচারক শাহেদুল করীমের কাছে প্রত্যক্ষদর্শীর জবানবন্দি দেন।
মো. রহমত উল্লাহ আরো জানান, আদালতে দেওয়া প্রত্যক্ষদর্শীদের জবানবন্দি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, শিশু রাজন হত্যাকাণ্ডের মতো অপরাধে নিষ্প্রভ থেকে উৎসাহ দেওয়ার অভিযোগ তাঁদের বিরুদ্ধে প্রমাণিত হয়। এ কারণে তাঁদের রাজন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
রাজন হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জালালাবাদ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আলমগীর হোসেন জানান, প্রত্যক্ষদর্শী আজমত উল্লাহ ও ফিরোজ আলীর জবানবন্দি অনুসারে এ ঘটনায় আরো কয়েকজনের সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে। পুলিশ এজাহারভুক্ত আসামিসহ তদন্তে বেরিয়ে আসা আসামিদের গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
গত ৮ জুলাই সিলেট শহরতলির কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ডে প্রকাশ্যে রাজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ সময় নির্যাতনের ভিডিওচিত্রও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়া হয়। লাশ গুম করার সময় স্থানীয় লোকজন হাতেনাতে আটক করেন সিলেট সদর উপজেলার শেখপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মুহিত আলমকে। পরে মুহিতকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এ ঘটনায় মুহিত, তাঁর ভাই কামরুল ইসলাম, আলী হায়দার ও স্থানীয় চৌকিদার ময়না মিয়া লালকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন রাজনের বাবা।
মুহিতকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গতকাল সোমবার পাঁচ দিনের হেফাজতে (রিমান্ড) নিয়েছে পুলিশ। ওই দিন মুহিতের স্ত্রী লিপি বেগম ও আত্মীয় ইসমাইল হোসেন আবলুসকে পৃথক স্থান থেকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনার পর আরেক আসামি কামরুল ইসলাম পালিয়ে সৌদি আরব চলে গেলেও শেষ রক্ষা হয়নি। সেখানে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সহায়তায় সোমবার তাঁকে আটক করা হয়। আসামি ইসমাইলকে আজ পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।এখনো রাজন হত্যা মামলার অন্যতম আসামি আলী হায়দার পলাতক।