যুবলীগ নেতার দুই ভাইয়ের নামে মামলা নেয়নি পুলিশ
ঢাকার সাভার উপজেলায় কিশোরীকে গণধর্ষণের ঘটনায় উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সেলিম মণ্ডলের আপন দুই ভাইয়ের নামে মামলা নেয়নি পুলিশ। দুই ভাইয়ের নাম বাদ দিয়ে পুলিশ যুবলীগ নেতার দুই খালাতো ও চাচাতো ভাইসহ তিনজনের নামে মামলা নেয়।
মামলার পর পুলিশ সেলিম মণ্ডলের চাচাতো ভাই তানভীর মণ্ডলকে (২১) সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের আক্রান এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।
এদিকে মামলা থেকে রক্ষা পাওয়ার পর বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন যুবলীগ নেতার ভাইয়েরা। সেলিম মণ্ডলের আপন ভাই মহসিন মণ্ডল (৩৫) ও জুয়েল মণ্ডল (৩০) মামলার বাদী ওই কিশোরীর বাবাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন কিশোরীর মামাতো ভাই।
মামাতো ভাই গতকাল সন্ধ্যায় এনটিভি অনলাইনকে জানান, তাঁর ফুপাতো বোন বৃহস্পতিবার বিকেলে বন্ধুদের সঙ্গে বিরুলিয়ার একটি এলাকায় বেড়াতে যায়। এ সময় সেখানে হানা দেন সাভার উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সেলিম মণ্ডলের ভাই বিরুলিয়ার আক্রান এলাকার মহসিন মণ্ডল ও জুয়েল মণ্ডল, চাচাতো ভাই তানভীর মণ্ডল, খালাতো ভাই হামিদ চিরমিরি (৩৫) এবং তাঁদের সহযোগী গাজীপুরের কালিয়াকৈরের পারভেজ। তাঁরা তাঁর বোন ও বোনের বন্ধুদের পিটিয়ে আহত করেন। এরপর বোনের চোখ বেঁধে জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণ করেন তাঁরা। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁর বোনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। খবর পেয়ে তিনি ছুটে যান।
ওই কিশোরী কাঁদতে কাঁদতে এনটিভি অনলাইনকে বলে, ‘মহসিন মণ্ডল, জুয়েল মণ্ডল, তানভীর মণ্ডল, হামিদ আর কালিয়াকৈরের এক ছেলে, নাম হলো পারভেজ। আমি আমার ফ্রেন্ডদের সঙ্গে ঘুরতে গেছি। ওরা ওইখানে গিয়া আমার সঙ্গে এ রকম করা শুরু করছে। ওদেরও পিটাইছে, আমাকেও পিটাইছে। টর্চার করছে, আমাকে ধর্ষণ করছে। এগুলো কি মানুষের কাজ?’
এদিকে ঘটনার পর মামলা করতে রাতে সাভার মডেল থানায় যান কিশোরীর অটোরিকশাচালক বাবা। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তিনি পাঁচজনকে আসামি করে এজাহার দিলেও পুলিশ কর্মকর্তারা সেলিম মণ্ডলের আপন ভাই মহসিন মণ্ডল ও জুয়েল মণ্ডলের নাম বাদ দিয়ে দেন। মামলা করতে যাওয়ার অপরাধে তাঁরা হত্যার হুমকি দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসিনুল কাদির বলেন, ধর্ষণের অভিযোগে কিশোরীর বাবা তিনজনের নামে মামলা করেছেন। এক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সুজনসহ একাধিক বাসিন্দা অভিযোগ করেন, সাভার উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সেলিম মণ্ডল ও তাঁর ভাইয়েরা বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। কেউ এর প্রতিবাদ করলে তাদের ওপর অন্যায় অত্যাচার নেমে আসে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল বিকেলে বিরুলিয়ার একটি স্থানে বেড়াতে গেলে ওই কিশোরী ও তাঁর বন্ধুদের মারধর করেন সেলিম মণ্ডলের আপন ভাই মহসিন মণ্ডল ও ছোট ভাই জুয়েল মণ্ডল, চাচাতো ভাই তানভীর মণ্ডল, খালাতো ভাই হামিদ চিরমিরি ও পারভেজ নামের এক যুবক। এ সময় গণধর্ষণে সহায়তা করেন বিরুলিয়ার দেউন এলাকার ইয়াবা ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম ওরফে টোকাই রতন।