চট্টগ্রামে ভোগান্তিতে যাত্রী, চালক বিপাকে
দেশের মহাসড়কগুলোতে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও সব ধরনের অযান্ত্রিক যান চলাচল বন্ধের দ্বিতীয় দিন চলছে। গতকালের মতো আজ রোববারও এ নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় যাত্রী ভোগান্তির পাশাপাশি উত্তেজনা চলছে বন্ধ যানবাহন মালিক ও চালকদের মধ্যে। সরকারের এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হলে আগামী ১৩ আগস্ট ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট শ্রমিক নেতারা।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের অনেক এলাকায় বিকল্প সড়ক নেই। এমনকি সেসব এলাকার কিছু কিছু অংশে গণপরিবহনও নেই। তাই সিএনজিচালিত অটোরিকশা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে স্বল্প দূরত্বে যাতায়াতকারীরা পড়েছেন বিপাকে। বাধ্য হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ট্রাক অথবা পিকআপ ভ্যানে উঠতে দেখা গেছে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে আশপাশের বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের।
ট্রাকে চড়ে স্কুলে যাওয়ার পথে শিক্ষার্থীদের একজন বলল, ‘আমরা প্রতিদিন স্কুলে ট্যাক্সি করে যাই। আজকে ট্যাক্সি পাইতেছি না আমরা, মানে ট্যাক্সি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে ট্রাকে করে যাচ্ছি।’
এদিকে, কর্মহীন অটোচালকরা জটলা করছেন মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে। কখনো মিছিল করছেন, কখনো আবার এসব উত্তেজিত চালকরা চেষ্টা করছেন সড়ক অবরোধের। তবে এসব পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তৎপর রয়েছে পুলিশ। কোনোভাবেই সরকারের নির্দেশ অমান্য করার সুযোগ দেওয়া হবে না বলে জানান হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সহিদ উল্লাহ। তিনি বলেন, ‘কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব। কেউ যেন এমন কোনো কার্যক্রম না করে, যেটা ফৌজদারি আইনে অপরাধ। আমরা সেটা বারবার উনাদের বুঝিয়ে বলেছি। আমরা আছি। উনারাও উনাদের অবস্থানে আছেন। যান চলাচল যেন স্বাভাবিক থাকে, আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করতেছি।’
এদিকে সরকারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে এরই মধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে অটোরিকশা-টেম্পো শ্রমিক ইউনিয়ন। ৪ আগস্ট মহাসড়কে মানববন্ধন, ৯ আগস্ট সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান এবং ১৩ আগস্ট চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠের সমাবেশ থেকে অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার পরিকল্পনার কথা জানান চট্টগ্রাম অটোরিকশা-টেম্পো শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. হারুনুর রশীদ। তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম মহানগরী এবং জেলার মধ্যে প্রায় ৭০ হাজার চালক রয়েছে। ওই চালকদের একত্র করে ধর্মঘটের দিন বিকেল ৪টায় লালদীঘি চত্বরে একটা সমাবেশের আয়োজন করব। এর পরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধের মতো কর্মসূচি দেওয়ার জন্য আমাদের পরিকল্পনা আছে।’
দেশের মহাসড়কগুলোয় ক্রমবর্ধমান দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ১ আগস্ট থেকে নছিমন-করিমন-ভটভটি ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা, টেম্পোসহ সব ধরনের অযান্ত্রিক যান চলাচল বন্ধ করে দেয় সরকার।