মৌলভীবাজারে প্রসূতির মৃত্যু, চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা

মৌলভীবাজারে ভুল অস্ত্রোপচারে প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ এনে চিকিৎসক ফারজানা হক পর্ণাসহ দুজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ বুধবার প্রসূতি পপি রানী পালের দেবর মিন্টু পাল বাদী হয়ে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে মামলা করেন।
মামলায় নূরজাহান প্রাইভেট হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তোয়াহিদ আহমদসহ অজ্ঞাতনামা আরো চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। ডা. ফারজানা মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের চিকিৎসক।
মামলার আরজি সূত্রে জানা যায়, পপি রানী পাল সন্তানসম্ভবা হওয়ায় গত ২৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় নূরজাহান প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি হন। পপি রানীর পরিবার অস্ত্রোপচারের (সিজার) জন্য ডা. সুধাকর কৈরীকে চাইলে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ডা. ফারজানা হক পর্ণা ভালো ডাক্তার। মহিলাদের জন্য মহিলা চিকিৎসক ভালো হবে। পপি রানী পালকে রাত ৯টায় অস্ত্রোপচার কক্ষে নেওয়া হয়। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাঁর একটি ছেলেসন্তানের জন্ম হয়।
আরজিতে আরো বলা হয়, রাত সাড়ে ১০টায়ও পপি রানী পালের রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় ডা. ফারজানা হক পর্ণা তাঁর সহযোগীদের নিয়ে পরপর তিনবার অস্ত্রোপচার করেন। তাঁরা পেটের ভেতর বেলুন ঢুকিয়ে রক্ত বন্ধ করার চেষ্টা করেন। বেলুনে প্রচুর রক্ত জমা ছিল। এভাবে ডা. ফারজানা হক পর্ণা ও তাঁর সহযোগীরা বারবার চেষ্টা করেও রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে না পেরে ভোর ৬টার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে বলেন। ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে নেওয়ার পর পপি রানী পালের অবস্থার আরো অবনতি ঘটে। চিকিৎকরা তাঁকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (পিজি হাসপাতাল) নিতে বলেন। রোগীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি দেখে তাঁকে ঢাকায় না নিয়ে সিলেটের পার্ক ভিউ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে কৃত্রিম বেলুন পদ্ধতি অপরিবর্তিত রেখে আট ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়। কোনো উন্নতি না হওয়ায় ভোর রাত ৪টায় পার্ক ভিউ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পপি রানী পাল মারা যান।
আরজিতে অভিযোগ করা হয়, প্রথম আসামি ডা. ফারজানা হক পর্ণা রোগী পপি রানী পালকে ভুলভাবে অস্ত্রোপচার করে পেটের ভেতর গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কেটে ফেলেন। তাড়াহুড়া করে তিনি ডেলিভারি সম্পন্ন করেন। দ্বিতীয় আসামি তোয়াহিদ আহমদসহ অজ্ঞাতনামা চার-পাঁচজনের সহযোগিতায় ২৪ নভেম্বর রাত ৯টা থেকে পরদিন ভোরে তাদের অধীনে রেখে মৃত্যু নিশ্চিতের পথে মুমূর্ষু অবস্থায় সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড দেখিয়ে পরিবারের সদস্যদের কাছে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হস্তান্তর করেন।