সুন্দরবনে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ছয়জন নিহত

খুলনার কয়রা উপজেলার মান্দারবাড়িয়া এলাকায় আজ রোববার বিকেলে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ছয়জন নিহত হয়েছে। নিহত ব্যক্তিরা সবাই বনদস্যু বলে পুলিশ দাবি করেছে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন আনসার সানা, সিদ্দিক সানা, রফিকুল ইসলাম, মজিদ গাজী, মামুন গাজী ও বাপ্পি ঢালী। তাঁদের সবার বাড়ি কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেতকাশীতে।
পুলিশের ভাষ্যমতে, বন্দুকযুদ্ধের ঘটনাস্থল থেকে তিনটি ১০ ফুট লম্বা বাঘের চামড়া, চারটি একনালা বন্দুক, একটি পিস্তল এবং সাতটি বন্দুকের গুলি উদ্ধার করা হয়। বন্দুকযুদ্ধে কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হরেন্দ্র নাথ সরকারসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হরেন্দ্র নাথ সরকার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, আজ সকালে দক্ষিণ বেতকাশির চোরামুখা গ্রাম থেকে বনদস্যু ইলিয়াস বাহিনীর সদস্য মজিদ গাজীকে আটক করা হয়। তাঁকে নিয়ে পুলিশ বিকেল সাড়ে ৪টায় অস্ত্র উদ্ধারে সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়ায় গেলে তাঁর সহযোগিরা পুলিশের ওপর গুলি বর্ষণ করে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। উভয়পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময়ের পর ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ছয়জনের গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার করে।
তবে পুলিশের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেছেন কয়রার দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের চরামুখা গ্রামের লোকজন। তাঁরা জানিয়েছেন, কয়রা থানার পুলিশ চোরামুখা গ্রামের শফিকুল গাজীর বসতঘর থেকে তিনটি বাঘের চামড়াসহ সাতজনকে আটক করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বন বিভাগের কোবাদক স্টেশন কর্মকর্তা শিবাজী চক্রবর্তী এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছিলেন, সকালে পুলিশ চোরামুখা গ্রাম থেকে সাতজনকে আটক করে বলে তিনি শুনেছেন। এঁদের মধ্যে রয়েছেন গ্রামের আবদুল গাজীর ছেলে শফিকুল ইসলাম গাজী (৩৫) ও মামুন গাজী (৩০), জোমাত ঢালীর ছেলে বাপ্পি ঢালী (২৮) ও শহীদুল গাজীর স্ত্রী নাজমা বেগম (২৫)। বাকিদের নাম জানাতে পারেননি বন কর্মকর্তা।
আটকের ব্যাপারে দুপুরে কয়রা থানার ওসি হরেন্দ্র নাথ সরকারের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তাঁকে পাওয়া যায়নি। থানায় ফোন করলে জানায়, ওসি সুন্দরবনে অভিযানে গেছেন।
যোগাযোগ করা হলে পুলিশের খুলনা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. মনিরুজ্জামান জানান, সুন্দরবনের বাঘ রক্ষার্থে তাদের বিশেষ অভিযানে জাহাঙ্গীর বাহিনীর সদস্য মজিদ গাজীকে আটক করা হয়। পরে তাঁকে নিয়ে অভিযানে গেলে তাঁর সহযোগীরা গুলিবর্ষণ করলে এই বন্দুকযদ্ধের ঘটনা ঘটে।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিআইজি বলেন, বন্দুক যুদ্ধের ঘটনাস্থল থেকেই তিনটি বাঘের চামড়া উদ্ধার করা হয়। সকালে আটকের ঘটনাকে তিনি গুজব বলে দাবি করেন।