বান্দরবানে থমকে গেছে এলজিইডির ২০০ কোটি টাকার উন্নয়নকাজ
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2017/12/20/photo-1513770271.jpg)
বান্দরবানে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) প্রায় ২০০ কোটি টাকার উন্নয়নকাজ থমকে গেছে। জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন চাকমার অপসারণের দাবিতে স্থানীয় ঠিকাদাররা চলমান উন্নয়নকাজগুলো বন্ধ করে দিয়েছেন।
আজ বুধবার সকালে চলমান বিভিন্ন উন্নয়নকাজের ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে লামা উপজেলায় বাইন্নাছড়া-গজালিয়া সড়ক, তিন কোটি টাকা ব্যয়ে কালাঘাটা-তারাছা সড়ক, ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার লেম্বুছড়ি-তুমব্রু সড়ক, প্রায় ছয় কোটি টাকা ব্যয়ে রুমা উপজেলার পলিকা সড়কের দুটি সেতু নির্মাণ, ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে গোয়ালিখোলা সাঙ্গু সেতু নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মনজয় মারমা অভিযোগ করে বলেন, গোয়ালিখোলা সেতু নির্মাণের কাজ খুবই ধীরগতিতে এগুচ্ছে। তার মধ্যে প্রকৌশলীর সঙ্গে বিরোধের কারণে হঠাৎ করে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এমনভাবে চলতে থাকলে আগামী ১০ বছরেও সেতুটি নির্মিত হবে না।
স্থানীয় ঠিকাদার সমিতির উপদেষ্টা মশিউর রহমান মিঠুন অভিযোগ করে বলেন, ‘নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন চাকমা কোনো কারণ ছাড়াই ঠিকাদার রফিক আহমদকে মারধর করেছেন। উন্নয়নকাজের আরো অনেক ঠিকাদারকে ফোন করে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন এবং এলজিইডি বিভাগে কীভাবে কাজ করবে- দেখিয়ে দেওয়ার হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। নির্বাহী প্রকৌশলী চাচ্ছেন না চলমান উন্নয়নকাজগুলো দ্রুত সম্পন্ন হোক। বাধ্য হয়েই নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্ত সড়ক বিভিন্ন উন্নয়নকাজগুলো বন্ধ রেখেছি। প্রকৌশলীকে অপসারণ না হওয়ায় কাজ বন্ধ থাকবে।’
উন্নয়নকাজের ঠিকাদার সৌরভ দাশ শেখর বলেন, ‘আমার বাইন্নাছড়া-গজালিয়া সড়কে চলমান ১৫ কোটি টাকার উন্নয়নকাজ বন্ধ করে দিয়েছি। শুধু আমি নয়, প্রায় ২০০ কোটি টাকার চলমান উন্নয়নকাজ বন্ধ করে দিয়েছেন ঠিকাদাররা। নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত সব ধরনের উন্নয়নকাজ বন্ধ রাখার নিদ্ধান্ত নিয়েছেন ঠিকাদাররা।’
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে এলজিইডির লামা উপজেলা প্রকৌশলী মোবারক হোসেন বলেন, জেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে বিরোধের জের ধরে বাইন্নাছড়া-গজালিয়া সড়কসহ চলমান অনেক উন্নয়নকাজই বন্ধ করে দিয়েছেন ঠিকাদাররা।
জেলা এলজিইডি বিভাগের সিনিয়র প্রকৌশলী জিল্লুর রহমান বলেন, ‘উন্নয়নকাজ চলমান আছে। গতকালও নাইক্ষ্যংছড়িতে একটি ব্রিজের ঢালাই হয়েছে। উন্নয়নকাজ বন্ধের কোনো খবর আমাদের কাছে নেই। ব্যক্তি স্বার্থে কেউ কাজ বন্ধ রাখলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে মেসার্স আকতার ট্রেডার্সের লাইসেন্সের বই সংগ্রহ করতে জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর অফিস সহকারীর কম্পিউটার রুমে যান লামা উপজেলার বাসিন্দা ঠিকাদার রফিক আহমেদ। সেখানে হঠাৎ করে রফিককে ঘুষি ও চড়-থাপ্পড় মারেন নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন চাকমা। এ ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করে উন্নয়নকাজ বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় ঠিকাদার সমিতি। এ ছাড়া নির্বাহী প্রকৌশলীর অপসারণের দাবিতে এলজিইডি প্রধান প্রকৌশলী, পার্বত্য প্রতিমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেন ঠিকাদাররা।