শরীয়তপুরে প্রবাসী যুববকে কুপিয়ে হত্যা
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার কদম আলী মাদবর কান্দি গ্রামে জামাল মাদবর (৩৫) নামের এক প্রবাসী যুবককে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল রোববার দিবাগত রাতে দুর্বৃত্তরা জামালের বাড়িতে ঢুকে তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ জামালের স্ত্রীকে আটক করে।
আজ সোমবার সকালে পুলিশ জামালের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
জাজিরা থানা ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বিকেনগর ইউনিয়নের কদম আলী মাদবর কান্দি গ্রামের আমজাদ মাদবরের ছেলে জামাল মাদবর বাহরাইনে চাকরি করতেন। সাত বছর আগে একই উপজেলার হাজি কালাই মোড়লের কান্দি গ্রামের মুক্তা বেগমের বিয়ে হয়। জামাল বাহরাইন থেকে দুই বছর পরপর বাড়ি আসতেন। স্থায়ীভাবে থাকার জন্য গত জুন মাসের শেষ সপ্তাহে জামাল স্ত্রী ও সন্তানের কাছে দেশে আসেন। জামালের অনুপস্থিতিতে স্ত্রী মুক্তা প্রায় সময়ই তাঁর বাবার বাড়িতে থাকতেন।
রোববার জামাল স্ত্রী সন্তান নিয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে নিজের বাড়িতে ফিরে আসেন। রাতের খাবার খেয়ে স্ত্রীকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। গভীর রাতে দুর্বৃত্তরা ঘরে ঢুকে জামালকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। জামালের শরীরের নয়টি স্থানে কোপানো হয় বলে জানিয়েছে জাজিরা থানার পুলিশ।
জামালের বড় ভাই দানেশ মাদবর অভিযোগ করেছেন, এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জামালের স্ত্রী মুক্তা বেগম জড়িত। তিনি বলেন, ‘আমার ভাই বাহরাইন প্রবাসী। ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে তাঁর স্ত্রী মুক্তা প্রায় সময়ই তার বাবার বাড়িতে থাকত। মুক্তার সঙ্গে দেলোয়ার নামের এক যুবকের সম্পর্ক ছিল। ওই যুবক আমাদের বাড়িতেও একাধিক বার এসেছে। বিষয়টি মুক্তার বাবাকে জানাই। তিনি মেয়েকে এ বিষয় নিয়ে সতর্ক করে দেন। আমরাও ভেবেছিলাম বিষয়টি মীমাংসা হয়ে গেছে। জামাল স্থায়ী ভাবে দেশে থাকার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় তারা খুনের পরিকল্পনা করে। ওরাই আমার ভাইকে মেরে ফেলেছে।’
পুলিশের হাতে আটক হওয়ার আগে মুক্তা বেগম জানান, কারা তাঁর স্বামীকে হত্যা করেছে তা তিনি জানেন না। স্বামীর চিৎকার শুনে ঘুম থেকে জেগে দেখেন তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় বিছানায় পড়ে আছেন। তখন তিনি চিৎকার দিলে স্বজনরা ছুটে আসেন।
হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি জানতে পেরে আজ সকালে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠায়। পরিবারের মৌখিক অভিযোগ ও সন্দেহজনক আচরণ দেখে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ মুক্তা বেগমকে আটক করেছে। এ ঘটনায় এখনো জাজিরা থানায় মামলা হয়নি। নিহত জামালের মুন্না (৫) নামের এক ছেলে ও জ্যোতি (৪) নামের এক মেয়ে রয়েছে।
জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটির কারণ উদঘাটনের চেষ্টা চলছে। এর সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। জামালের স্ত্রীর আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে।’