‘ভাতিজিকে’ ধর্ষণ শেষে হত্যা, দুই দিন লাশ ছিল ঘরে
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলায় মাদ্রাসাছাত্রী নুশরাত জাহান নুশুকে (৮) ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় শাহ আলম রুবেল ও তাঁর সহযোগী বোরহান উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার রাতে খুলনায় যাওয়ার পথে রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে বোরহানকে রামগঞ্জের নোয়াগাঁও থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে রামগঞ্জ থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আ স ম মাহাতাব উদ্দিন।
নিহত নুশরাত রামগঞ্জের ফয়েজে রাসুল নুরানী মাদ্রাসায় তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ত। সে গ্রেপ্তার হওয়া রুবেলের দুঃসম্পর্কের ভাতিজি। সদ্য বিবাহিত রুবেল ঢাকায় গার্মেন্টসের ব্যবসা করেন।
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ব্রহ্মপাড়া এলাকার ব্রিজের নিচ থেকে গত ২৬ মার্চ নুশরাতের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ছবি : এনটিভি
এসপি জানান, গত ২৩ মার্চ দুপুরে আইসক্রিম খাওয়া ও টিভি দেখার কথা বলে রামগঞ্জের পশ্চিম নোয়াগাঁও গ্রামের রুবেল একই বাড়ির শিশু নুশরাতকে ঘরে ডেকে নেন। এরপর শিশুটিকে ধর্ষণ করেন। একপর্যায়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে লাশ চট দিয়ে বেঁধে ঘরের স্টিলের আলমারির ওপর রেখে দেন। এভাবেই লাশ দুদিন ঘরে ছিল। ২৫ মার্চ রাতে বন্ধু বোরহানের সহযোগিতায় নুশরাতের বস্তাবন্দি লাশ সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ওঠান রুবেল। এরপর তা তিন কিলোমিটার দূরে রামগঞ্জের কাঞ্চনপুরের ব্রহ্মপাড়ার একটি ব্রিজের নিচে খালের পানিতে ফেলে দেন। পুলিশের কাছে রুবেল এ স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
নিখোঁজের তিনদিন পর গত ২৬ মার্চ ব্রহ্মপাড়া এলাকার ব্রিজের নিচ থেকে নুশরাতের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তা ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে জানা গেছে, নুশরাতকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তার মা রেহানা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন। এ হত্যাকাণ্ডের পর থেকে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে ঢাকা ও রামগঞ্জের বিভিন্নস্থানে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন।
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলায় মাদ্রাসাছাত্রী নুশরাত জাহান নিশুকে এই অটোরিকশায় করে লাশ বহন করে খালের পানিতে ফেলে দেওয়া হয়। ছবি : এনটিভি
রামগঞ্জ থানার পুলিশ জানায়, তদন্তের একপর্যায়ে পুলিশ জানতে পারে এই ঘটনায় নুশরাতের সম্পর্কের চাচা শাহ আলম রুবেল ও তাঁর সহযোগী বোরহান উদ্দিন জড়িত। রোববার রাতে রামগঞ্জের নোয়াগাঁও থেকে বোরহানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোতা মিয়ার নেতৃত্বে পুলিশ খুলনায় যাওয়ার পথে রুবেলকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় নুশরাতের মরদেহ বহনকারী সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাগ, ব্যবহৃত জুতা ও শীতল পাটি উদ্ধার করা হয়।