সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তাসহ চারজনের নামে দুদকের মামলা

সোনালী ব্যাংক খুলনার দৌলতপুর করপোরেট শাখার গুদামের ছয় কোটি ৫৯ লাখ টাকার পাট বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগে ব্যাংকের কর্মকর্তা এস এম ইমদাদুল হক, গুদাম রক্ষক সোহেল হোসেন জোয়ার্দ্দারসহ চারজনের নামে মামলা করেছে দুদক।
সোমবার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) খুলনা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. মোশারেফ হোসেন বাদী হয়ে সোমবার বিকেলে দৌলতপুর থানায় এই মামলা করেন।
মামলার বিবরণে বলা হয়, মেসার্স আকবার আলী অ্যান্ড সন্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. শফিকুল হক বিশ্বাস ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রবিউল হক বিশ্বাস ২০০৯-১০ মৌসুমে মানিকতলায় ব্যাংকের ওই গুদামে মজুদ পাট দেখিয়ে ৯ কোটি ৬২ লাখ টাকার ঋণ নেন। পরে গুদামের পাট তছরুপ হয়েছে এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১০ সালের ১১ অক্টোবর ব্যাংকের একটি দল সরেজমিনে গুদাম পরিদর্শন করেন। ব্যাংকের খাতাপত্র অনুযায়ী গুদামে ৫৫ হাজার ৫২৩ মণ পাট থাকার কথা। কিন্তু তদন্তে মাত্র চার হাজার ৬৬ মণ পাট পাওয়া যায়। ফলে পাটের ঘাটতি হয় ৫১ হাজার ৪৫৭ মণ। ঘাটতি পাটের মূল্য হয় আট কোটি ২৩ লাখ ৩১ হাজার ২০০ টাকা। ২০ শতাংশ মার্জিন থাকায় ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়ায় ছয় কোটি ৫৯ লাখ টাকায়।
মামলার আর্জিতে বলা হয়, প্লেজ গুদামের চাবি ব্যাংকে সংরক্ষিত থাকে। প্রয়োজনে গুদামের চাবি ব্যবস্থাপকের অনুমতি ক্রমে রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করে গুদামে নিয়ে আবার ব্যাংকে জমা রাখার বিধান রয়েছ। গুদামে পাট সঠিকভাবে সংরক্ষিত না থাকার পরও সোনালী ব্যাংক কপোরেট শাখার কর্মকর্তা এস এম ইমদাদুল হক লিখিতভাবে জানান, খাতাপত্র অনুয়ায়ী গুদামের পাট সঠিক রয়েছে।
এই ঘটনা দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় দীর্ঘ তদন্ত করে আত্মসাতের ঘটনা প্রমাণিত হওয়ায় সোমবার বিকেলে এই মামলা করা হয়। মামলাটি সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ৪০৬/৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ [৫] ১ ধারায় মামলাটি রুজু করা হয়। মামলাটি খুলনা দুদক তদন্ত করবে।
মামলায় আসামি করা হয়েছে মেসার্স আকবার আলী অ্যান্ড সন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রবিউল হক বিশ্বাস, প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান মো. শফিউল হক বিশ্বাস, সোনালী ব্যাংক খুলনার দৌলতপুর করপোরেট শাখার ঋণ কর্মকর্তা এস এম ইমদাদুল হক ও গুদাম রক্ষক সোহেল হোসেন জোয়ার্দ্দার।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুদক ও পুলিশ এই চার আসামিকে আটকের জন্য বিশেষ অভিযান শুরু করেছে।
উল্লেখ্য, মেসার্স আকবার আলী সন্স এর আগে এক দফা পাটগুদামে অগ্নিকাণ্ডের পর ক্ষতিপূরণ বাবদ বিমার টাকা আদায় করেছিল। অভিযোগ ছিল, গুদামের পাট সরিয়ে পরে আগুন দেওয়া হয়।