‘এবার খালি মাঠে গোল দিতে চাই না’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, ‘এবারের নির্বাচনে না এলে বিএনপিকে আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।’ তিনি আরো বলেন, ‘গতবার আমরা খালি মাঠে গোল দিয়েছিলাম। কিন্তু এবার আর খালি মাঠে গোল দিতে চাই না।’
আজ মঙ্গলবার রাজশাহী নগরীর সাহেব বাজারে আয়োজিত ১৪ দলের বিভাগীয় জনসভায় এসব কথা বলেন মোহাম্মদ নাসিম।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী শেখ হাসিনার অধীনেই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশের মানুষ এখন নির্বাচনের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। নির্বাচনের বিকল্প শুধুই নির্বাচন। গতবার আমরা খালি মাঠে গোল দিয়েছিলাম। কিন্তু এবার আর খালি মাঠে গোল দিতে চাই না। খেলে গোল দিতে চাই। তাই বিএনপি জামায়াতকে বলছি ষড়যন্ত্র করে লাভ হবে না। ষড়যন্ত্র বাদ দিয়ে নির্বাচনে আসুন। এবার নির্বাচনে না এলে আগামীতে বাটি চালান দিয়েও আপনাদের আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।’
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে, যারা জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেছে, তাদের সাথে কোনো আলোচনা নেই, কোনো সংলাপ নেই। তাদের সাথে কোনো আপস নয়। সংসদ নির্বাচন হবে, যথা নিয়মেই হবে। পৃথিবীর কোনো শক্তি বাংলাদেশের নির্বাচন বন্ধ করতে পারবে না।’
আগামী নির্বাচনে ১৪ দলীয় জোটই নির্বাচিত হবে উল্লেখ করে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘নির্বাচনে বিজয় ছাড়া আমাদের আর কোনো লক্ষ্য নেই। মেসি গোল মিস করতে পারে, নেইমার গোল মিস করতে পারে কিন্তু শেখ হাসিনার গোল মিস হবে না। কারণ, মানুষ জানে বিএনপি-জামায়াত আবারও ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশ জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত হবে। দেশে আবারও জ্বালাও-পোড়াও শুরু হবে, দেশে রক্তের বন্যা বয়ে যাবে। তাই কোনো ঐক্য করে আর জোট করে লাভ হবে না। দেশের মানুষ জানে কেবলে ১৪ দলীয় জোটই মুক্তিযুদ্ধের ধারক ও বাহক।’
গত সিটি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনকে রাজশাহী সিটির মেয়র নির্বাচিত করায় রাজশাহীবাসীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘একইভাবে আগামী সংসদ নির্বাচনেও রাজশাহীর প্রতিটি আসনে নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন আপনারা সহায়তা করবেন।’
জনসভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘আগামীকাল বুধবার ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায় দেওয়া হবে। এই রায় নিয়ে কেউ টুঁ শব্দ করলে, তার দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেওয়া হবে।’
দুপুর থেকেই রাজশাহীসহ আশপাশের জেলা ও বিভিন্ন উপজেলা থেকে আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের নেতাকর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে সমাবেশস্থলে এসে পৌঁছায়। বিকেল সাড়ে ৩টা নাগাদ নগরীর সাহেববাজারের সমাবেশস্থল নেতাকর্মীদের ভিড়ে একাকার হয়ে উঠে। স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে পুরো প্রাঙ্গণ। সমাবেশ স্থলে নারীদের উপস্থিতিও ছিল ব্যাপক।
রাজশাহী মহানগর ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সিটি মেয়ের এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, জাসদ সভাপতি শরিফ নূরুল আম্বিয়া, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি সৈয়দ নজিবুল বশর মাজভান্ডারী, জনআজাদী লীগের সভাপতি এস কে সিকদার, গণতান্ত্রিক পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন প্রমুখ। জনসভায় অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী, আয়েন উদ্দিন, ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক, আবদুল ওয়াদুদ দারা ও বেগম আখতার জাহানসহ রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন আসনের সংসদ সদস্য, মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি শাহীন আকতার রেনী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাঃ আসাদুজ্জামান আসাদ উপস্থিত ছিলেন। জনসভা পরিচালনা করেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লায়েব উদ্দিন লাবলু ও জাসদের মহানগর সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাহামুদ শিবলী।