‘অ্যামনেস্টির যুক্তি হাস্যকর’

মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার নিয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের যুক্তিকে ‘হাস্যকর’ বলে উল্লেখ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার ড. তুরিন আফরোজ।
রাজধানীর গুলশানে স্পেক্ট্রা কনভেনশন সেন্টারে আজ শনিবার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় বাস্তবায়ন ও নিরাপত্তা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে তুরিন আফরোজ এ কথা বলেন।
সকাল ১০টার দিকে শুরু হওয়া এ বৈঠকে কুটনীতিক, আইনজীবী ও মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা বলেছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার বানচাল করতে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর লবিংয়ের কারণে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো মুক্তিযোদ্ধাদের বিচার দাবি করছে। এ সময় তাঁরা মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার নিয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দেওয়া বিবৃতির প্রতিবাদ জানান।
তিন ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠকে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আহ্বায়ক শাহরিয়ার কবীর বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ বা বিলম্বিত করার জন্য বাইরে লবিং করছে। এ লবিংয়েরই ফলশ্রুতিতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, বিচার ঠিক হয়নি এদের ছেড়ে দিতে হবে।’
ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ বলেন, ‘অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যশনাল বলছে মুক্তিযোদ্ধাদের বিচার করতে হবে। এর চেয়ে হাস্যকর যুক্তি আমার কাছে আর কিছু মনে হয়নি। স্টেটসম্যানের (বিবৃতি) এই জায়গাটি পড়ে আমার মনে হয়েছে, ১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনী, জামায়াতে ইসলামী, রাজাকার, আল-বদর, আল শামস, পিচ কমিটির সমস্ত সদস্যরা ঠিক একই কথা বলতেন কিন্তু।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মেসবাহ কামাল বলেন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এত বড় দুঃসাহস যে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের বিচার দাবি করতে পারে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বিরুদ্ধে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়? মানবাধিকারের ব্যবসায়ী হয়ে গেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও কূটনীতিক ওয়ালিউর রহমান বলেন, ‘বাইরের জার্মান, ফরাসি, ইংলিশ ভাষার কোনো খবর কাগজে একটি লেখা দেখলাম না, যেখানে আমাদের পক্ষে বা বিচারের পক্ষে কোনো রাষ্ট্রদূত বা ইনফেরমেশন অফিসার (তথ্য কর্মকর্তা) কিছু লিখেছেন। আই অ্যাম সেয়িং দিস অন রেকর্ড (আমি তথ্যানুযায়ী এই কথা বলছি)।’
গত ২৭ অক্টোবর অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালেন দেওয়া বিবৃতিতে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সংশয় প্রকাশ করা হয়। বলা হয়, রাজনৈতিক কারণেই এই বিচার হচ্ছে কি না। পাশাপাশি বিবৃতিতে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে নানা অপরাধের অভিযোগের তদন্ত ও বিচারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে উল্লেখ করা হয়।