নয়নের সঙ্গে বিয়ে হয়নি, শ্বশুরের বক্তব্য বানোয়াট : মিন্নি
রিফাত শরীফ হত্যার ঘটনা নিয়ে শ্বশুর আবদুল হালিম দুলাল শরীফের বক্তব্যকে বানোয়াট ও মনগড়া বলে দাবি করেছেন রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি। আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে সদর উপজেলার মাইঠা গ্রামে বাবার বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
মিন্নি তাঁর শ্বশুর দুলাল শরীফের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপিত ১০ দফা দাবিকে অসত্য দাবি করে বলেছেন, নয়ন বন্ডের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়নি। ২০১৮ সালের ১৫ অক্টোবর নয়ন বন্ড তার সহযোগীদের নিয়ে আমাকে একটি ঘরে নিয়ে জোরপূর্বক ভয় দেখিয়ে একটি কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছেন। দুই মাস আগে দুই পরিবারের কর্তা ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে রিফাত শরীফের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়েছে। রিফাতের সঙ্গে বিয়ের পরে নয়ন বন্ড কাবিননামা বের করে আমাকে স্ত্রী হিসেবে দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালাতে থাকে।
মিন্নি আরো দাবি করেন, বিয়ের পর তিনি তাঁর স্বামী রিফাত শরীফের সঙ্গেই কলেজে আসা-যাওয়া করতেন। গত ২৬ জুন রিফাত শরীফ মোটরসাইকেলে এসে তাঁর বাবার বাড়ি থেকে তাঁকে নিয়ে কলেজে গিয়েছিলেন। সকাল ১০টার দিকে রিফাত তাঁকে বলেছিলেন, তাঁর বাবা দুলাল শরীফ তাঁদের নিতে এসেছেন। কলেজ গেটে এসে শ্বশুরকে না দেখে আবার কলেজে যেতে চেয়েছিলেন। তখনই রিশান ফরাজীসহ হত্যাকারীরা তাঁর স্বামী রিফাত শরীফকে জাপটে ধরে কলেজের বাইরে রাস্তায় নিয়ে যান। কিছু বুঝে ওঠার আগেই কিল-ঘুষি, পরে কোপানো শুরু করে।
মিন্নি বলেন, অস্ত্রের সামনে তিনি তাঁর স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। ভিডিও ফুটেজে মানুষ সে দৃশ্য দেখেছে।
মিন্নি দাবি করেন, তিনি তাঁর স্বামী হত্যা মামলার ১ নম্বর সাক্ষী। তিনি তাঁর স্বামীর হত্যাকারীদের বিচার চান। অথচ তাঁর শ্বশুর দুলাল শরীফ ষড়যন্ত্রকারীদের প্ররোচনায় পড়ে তাঁকে জড়িয়ে বানোয়াট কথা বলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
মিন্নি আরো দাবি করেন, ০০৭ গ্রুপটি অত্যন্ত শক্তিশালী। তারা নিজেদের বাঁচাতে হত্যাকাণ্ডটির মোড় ঘোরানোর চেষ্টা করছে।
এদিকে আজ বেলা ১১টার দিকে আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বরগুনা প্রেসক্লাবের সামনে সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে মানববন্ধন করা হয়েছে। সেখানে বক্তব্য দেন রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফ, রিফাতের চাচা আবদুল আজিজ শরীফ, বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর ছেলে জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুনাম দেবনাথ ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা মারুফ মৃধা।
এর আগে আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের দাবিতে গতকাল শনিবার রাতে বরগুনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নিহত রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ।
মিন্নিকে গ্রেপ্তারের দাবির বিষয়ে বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন জানান, সব কিছু যথাযথ তদন্তের মধ্য দিয়ে আইনানুগভাবে করা হবে। তদন্তের স্বার্থে এ বিষয়ে আর কোনো কথা বলতে রাজি হননি তিনি।