প্রত্যাবর্তন, না পরিবর্তন
উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে একটি পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, পঞ্চগড় পৌরসভায় নির্বাচনী আমেজ ততই বাড়ছে। প্রার্থীরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন গণসংযোগ, ঘরোয়া বৈঠক ও পথসভা নিয়ে। তীব্র শীত উপেক্ষা করে সকাল থেকে প্রার্থীরা ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে ছুটছেন এ-পাড়া থেকে ও-পাড়া। দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত চলছে ৫১ প্রার্থীর ভোট-প্রচার।
এ পৌরসভায় মেয়র পদে লড়ছেন বিএনপি মনোনীত বর্তমান মেয়র মো. তৌহিদুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের জাকিয়া খাতুন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) আবদুল মজিদ বাবুল এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবদুল খালেক।
এ ছাড়া সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১২ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩৫ প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এ পৌরসভাবাসী একটি রেকর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। যদি বিএনপি মনোনীত প্রার্থী নির্বাচিত হন, তাহলে তিনি টানা পঞ্চমবারের মতো মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পাবেন। অন্যদিকে যদি আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বিজয়ী হন, তাহলে পৌরবাসী প্রথম একজন নারী মেয়র পাবেন।
১৯৮৫ সালের ১৫ জুন ২২ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে গঠিত হয় পঞ্চগড় পৌরসভা। ৯৪ সালে দ্বিতীয় শ্রেণি এবং ২০০৫ সালে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা পায় এই পৌরসভা। ৬০ হাজার লোকের বসবাস এ পৌরসভায়। মোট ভোটার সংখ্যা ৩০ হাজার ৭৭৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৫ হাজার ৩৭৫ ও নারী ভোটার ১৫ হাজার ৪০০ জন।
বর্তমান মেয়র ও পৌর বিএনপির সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার সময়ে পৌর এলাকায় আমূল পরিবর্তন এসেছে, অনেক উন্নয়ন হয়েছে। আমি পৌরসভাকে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করেছি। ভবিষ্যতে এ পৌরসভা হবে ট্রানজিট পৌরসভা। আমি সেভাবেই এখানকার অবকাঠামো গড়ে তুলতে চাই। এ কারণে ভোটাররা এবারো আমাকে বিজয়ী করবেন।’ তিনি জানান, এখন পর্যন্ত ভোটের পরিবেশ ভালো।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাকিয়া খাতুন এ পৌরসভায় মেয়র পদে পরিবর্তনের ব্যাপারে খুবই আশাবাদী। তাঁর বিশ্বাস, এ পৌরবাসী একজন নারী প্রার্থী পেয়েছেন। তাঁরা তাঁকে যোগ্য সম্মান ও মর্যাদা দেবে। জয়ী হলে উন্নয়নের মাধ্যমে পঞ্চগড়কে আধুনিক ও মডেল পৌরসভায় উন্নীত করবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
মহাজোটের শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের প্রার্থী জেলা জাসদের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মজিদ বাবুল দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। মুক্তিযোদ্ধা এবং একজন ভালো মানুষ হিসেবে জয়ী হবেন বলে আশা করছেন তিনি।
অন্যদিকে, জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা আবদুল খালেক স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে লড়ছেন। তিনি পঞ্চগড় সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ছিলেন। ভোটাররা পৌরসভায়ও তাঁকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন বলে তিনি আশা করেন।
এদিকে ভোটাররা জানান, এবারে প্রথম দলীয় প্রতীকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও সাধারণ ভোটাররা প্রতীকে নয়, ভোট দেবেন সৎ, যোগ্য ও নিষ্ঠাবান ব্যক্তিকে। ভোটাররা এলাকার উন্নয়ন চান, চান মাদকমুক্ত পরিবেশ। ড্রেনেজ ব্যবস্থা, পানি নিষ্কাশন, ডাস্টবিনসহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন আধুনিক পৌরসভা নির্মাণসহ সুখে-দুঃখে যাকে ডাকলে পাওয়া যায়, সাধারণ মানুষের সঙ্গে যার সম্পর্ক তাঁকেই ভোট দেবেনে ভোটাররা।