দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিএনপির একাংশের ঝাড়ু ও জুতা মিছিল
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/12/27/photo-1451233345.jpg)
বান্দরবানে পৌরসভার দলীয় মেয়র পদপ্রার্থী মোহাম্মদ জাবেদ রেজার বিরুদ্ধে ঝাড়ু ও জুতা মিছিল করেছে বিএনপির একাংশের নেতা-কর্মীরা। আজ রোববার বিকেলে জেলা বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের একাংশের নেতা-কর্মীরা এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে।
ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ জাবেদ রেজার পক্ষে কাজ না করার অভিযোগে জেলা বিএনপির যুব বিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান মিঠুন, ক্রীড়া সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে বহিষ্কার এবং জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুছ ও পৌর বিএনপির সভাপতি নাছির উদ্দিন চৌধুরীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। এরই প্রতিবাদে বিএনপির বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা জেলা শহরে ঝাড়ু ও জুতা নিয়ে বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
পরে বান্দরবান প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে মেয়র পদপ্রার্থী মোহাম্মদ জাবেদ রেজার কুশপুত্তলিকা দাহ করে নেতাকর্মীরা। পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল কুদ্দুছ, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী মহোতুল হোসেন, জেলা বিএনপির যুব বিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান মিঠুন, ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমসহ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বক্তব্য দেন।
সমাবেশে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল কুদ্দুছ বলেন, ‘জেলা বিএনপির সিদ্ধান্তকে পাশ কাটিয়ে অর্থের বিনিময়ে দুর্নীতিবাজ মোহাম্মদ জাবেদ রেজা ধানের শীষ প্রতীকের মনোনয়ন নিয়েছেন। বিএনপির লেবাসধারী আওয়ামী লীগের দালাল জাবেদ রেজাকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা মেনে নেয়নি। তিনি আরো বলেন, ‘দুর্নীতিবাজ জাবেদ রেজার অবৈধ টাকার খেলা বন্ধ করতে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। বহিষ্কারের আদেশ আমরা মানি না।’
সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল কুদ্দুছ চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে জাবেদ রেজাকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘ভাগিনা জাবেদ তোমার গুণ্ডাবাহিনী নিয়ে সাহস থাকলে আগামী ১ জানুয়ারি প্রেসক্লাবের সামনে রাস্তায় নাম। দেখি তোমার ক্ষমতা কতটুকু। বিএনপির ত্যাগী নেতা-কর্মীরাই তোমাদের রাস্তা থেকে উৎখাত করবে। আমার ক্ষমতা দেখানোর প্রয়োজন পড়বে না।’
জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা কাজী মহোতুল হোসেন বলেন, ‘অতীতের সবকিছু ভুলে ধানের শীষের পক্ষে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নেমেছিল। কিন্তু কথিত বিএনপি নেতাদের প্ররোচনায় জেলা বিএনপির দুই নেতাকে বহিষ্কার এবং দুজনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে অন্যায়ভাবে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বহিষ্কারের আদেশ প্রত্যাহার করা না হলে আরো কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
জেলা বিএনপির যুববিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান মিঠুন বলেন, ‘মেয়র নির্বাচিত হওয়ায় আওয়ামী লীগের ইন্ধনে নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে বিএনপিকে দুই ভাগে বিভক্ত করে রেখেছিল জাবেদ রেজা। দ্বিতীয়বার মেয়র নির্বাচিত আওয়ামী লীগের পকেটে চলে যাবে বিএনপির রাজনীতি। বিএনপির সাইনবোর্ড ব্যবহার করে সম্পদের পাহাড় গড়েছে কথিত বিএনপি নেতা জাবেদ রেজা।’
জেলা বিএনপির ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘জনগণের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা রাস্তাঘাট আর জনগণের উন্নয়নে কাজ করে। কিন্তু দুর্নীতিবাজ মেয়র জাবেদ রেজা পাঁচবছর শুধু নিজের উন্নয়ন করেছে। পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডেই জমির প্লট কিনেছে। পাঁচ বছরে দুর্নীতিবাজ জাবেদ রেজার সম্পদ বেড়েছে পাঁচগুণ। তিনি আরো বলেন, সরকারবিরোধী আন্দোলনে মেয়র জাবেদ রেজার মামলা ও হামলার কারণে মাঠে নামতে পারেনি বিএনপি নেতা-কর্মীরা। কিন্তু পৌরসভা নির্বাচনে জেলা বিএনপির সিদ্ধান্তকে পাশ কাটিয়ে অর্থের বিনিময়ে দুর্নীতিবাজকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিএনপির কথিত কেন্দ্রীয় নেতারা টাকার জন্য জাবেদ রেজার পক্ষে লোক দেখানো প্রচারণা চালিয়েছেন।’
ধানের শীষ প্রতীকের দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করায় জেলা বিএনপির যুববিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান মিঠুন, ক্রীড়া সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে গতকাল শনিবার রাতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ স্বাক্ষরিত একটি পত্রে বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুছ ও পৌর বিএনপির সভাপতি নাছির উদ্দিন চৌধুরীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।